জাগ্রত হওয়ার উপায় আগ্রহ ও বোধ



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
বাউল সাধক ফকির হৃদয় সাঁইয়ের সঙ্গে তার ভক্তরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

বাউল সাধক ফকির হৃদয় সাঁইয়ের সঙ্গে তার ভক্তরা, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লালন আখড়া (ছেঁউড়িয়া) কুষ্টিয়া থেকে: অসাধুদের ভিড়ে প্রকৃত লালন সাধকরাই আজ হারিয়ে যাচ্ছে। লালনের মাজারে তার ভাবাদর্শকে চর্চা না করে উল্টো সাধনার পরিবেশ নষ্ট করছে তারা। সাধু শাস্ত্রে আছে, ‘নিজ স্বভাব না ছাড়িলে গুরু কালে হয় না, স্বভাবে।’ লালন সাঁইজির নাম ব্যবহার করে যারা এসব করে বেড়াচ্ছেন, তাদের একজনেরও গুরু নেই। অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গেই কথাগুলো বলছিলেন বাউল সাধক ফকির হৃদয় শাহ।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবরে) লালনের মাজারের মিলনায়তনে এই সাধকের সঙ্গে বার্তাটোযেন্টিফোর.কম-এর কথা হয়। লালন চর্চা ও মানুষ হওয়ার উপায়সহ বেশকিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

হৃদয় শাহ বলেন, ‘এদের (মাজারে যারা লালনের ভাবাদর্শ চর্চা করে না) কারও গুরুভাব নেই, এদের ভক্তির অভাব নেই। এরা গান গেয়ে বেড়াচ্ছে, নাচানাচি করে বেড়াচ্ছে, সাঁইজিদের পাশে বসছে, সাঁইজিদের পোশাক পড়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু কয়জন লালন শাহকে অনুসরণ করছে?’

তিনি আরও বলেন, ‘লোকে বলে, ভাব না থাকলে ভক্তিতে কী হয়/ ভেবে বুঝে দেখ মনরায়, যার ভাব সেই জানতে পায়। আসলে আমাদের মূল্যবোধ এমন একটা অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, আমরা আধুনিক হয়েছি বটে, কিন্তু টোটালি আমরা যান্ত্রিক। আমাদের সাইকোলজি, ফিলোসফি এমন এক জায়গায় গিয়ে ঠেকছে- সেটা হলো ডাক্তারখানা।’

লালনের মাজারে ভক্ত, দর্শনার্থী ও বাউল শিল্পীরা

 

এই বাউল সাধক বলেন, ‘প্রকৃতি নির্ভর সাধনা করে বাউলরা, প্রকৃতির সঙ্গে বসবাস করে ফকিররা। আমি একটা উটকো মানুষ শহরবাসী ধুম করে এসে ফকিরের পাশে বসব, বুঝবোটা কী? বুঝতে হলে তৃষ্ণা থাকতে হবে। তৃষ্ণা থাকতে হলে সর্বপ্রথম আমাকে বিনয়ী হতে হবে। অথচ আমরা কোনো কিছুর মধ্যেই নেই। তাই আমরা সাঁইজির ভাষাও বুঝি না। আমরা যাই বুঝি যাই করি, সেটার আবার মূল্যায়ন চাই। লালন গবেষক হতে হবে। কিন্তু একটা ফকির তার কোনো কিছুর মূল্যায়ন চায় না। কে তারে ফকির ডাকল, সেটা তার দরকার নেই। দরকার হলো নিজের বোধকে, অনুভূতিকে জাগ্রত করা। আর এ জাগ্রত হওয়ার দুটো উপায়। একটা হচ্ছে আগ্রহ, আরেকটা বোধ। আমাদের আগ্রহ বেড়েছে কিন্তু বোধসত্ত্বা বাড়েনি।’

লালন মেলায় দর্শনার্থীদের আগ্রহ বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এতটা আমরা চাইনি। ধরে নিলাম, লালন চাইছে তাই হচ্ছে। কিন্তু লালন তো কাঁদেও যে, আমারে মানুষ বোঝে না ক্যান?’

উপস্থিত অসাধুদের (ঢোল ও হারমোনিয়ামে গান করছিলেন) দিকে দেখিয়ে হৃদয় শাহ বলেন, ‘এখানে সবাই গায়ক, সাধকটা কই? আপনি লালন মেলা করবেন মাঠে যান। কিন্তু ফকিরের মধ্যে এসে ফকির হওয়ার চেষ্টা করছেন কেন?’

লালন সংগীত বলে কিছু নেই জানিয়ে বাউল হৃদয় শাহ বলেন, ‘সংগীত হলো রবীন্দ্র সংগীত। আপনি দেখে পড়বেন। লালন তো দেখে পড়ার জন্য না। এটা ভাব গীতি। সাঁইজি তার ভক্তের উদ্দেশে বলেছেন, তিন পোড়াতেও খাঁটি হইলি না। তার ভক্তরা সে কথা বুঝলো না। সবই হলো সাঁইজির সত্যবাণী। তিনি তার ভক্তকুলের জন্য রেখে গেছে।’

লালনের আখড়ায় বাউল শিল্পীরা

 

ফকিরদের অতীত অবস্থানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আড়াইশ বছর আগেও ফকিরদের দেখতে আসতো। দূর থেকে দেখতো। আড়াইশ বছর পরে এসে ফকিরের পাশে বসে দেখছে। কোনো সমস্যাতো নেই। তাহলে লালন সাঁই কেন বলল, চিনাল পেলে চিনে নিতাম, যেত মনের ধুকধুকি। তাহলে কী আমি চিনালটা খুঁজব না? তাহলে কী আমরা বিশুদ্ধ লালন চর্চার মধ্যে নেই?’

এ বাউল সাধক বলেন, ‘লালন সাঁইজি বললেন, ফকির লালন মরল জল পিপাসায়/ কাছে থাকতে নদী দেখনা। আর আমাদের শিল্পীরা গান গাচ্ছে, ফকির লালন মরলেন জল পিপাসায়/ কাছে থাকতে নদী মেঘনা। মেঘনা যমুনা কিছুই তো নাই আছে নদী কালীগঙ্গা। কী ধারণ করলাম আর কী পরিবেশন করলাম! চাতক পাখি মেঘের জল ছাড়া খায় না। তাই যে বছর অনাবৃষ্টি হয়, সে বছর বহু চাতক পাখিকে জলাধারের পাশে মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। সাঁইজি সেই কনসেপ্টটা বোঝাতে চেয়েছিলেন। আর আমরা গান গাচ্ছি কী? ফকির লালন মরলেন জল পিপাসায়/ কাছে থাকতে নদী মেঘনা।’

হৃদয় শাহ বলেন, ‘আমাদের মোবাইল ছিল না মোবাইল আসছে, ল্যাপটপ ছিল না ল্যাপটপ আসছে, টাইমপাস করতে পারি না ফেসবুক আসছে। কিন্তু ভালোটা হব কবে? আমরা আস্তে আস্তে ভোঁতা হয়ে যাচ্ছি। মূল্যবোধের যে অবক্ষয়ে দাঁড়িয়েছি, লালন দর্শনের কোনো বিকল্প নেই। একমাত্র লালন দর্শনের মধ্য দিয়ে আমরা মূল্যবোধের অবক্ষয় থেকে রক্ষা পাব।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;