ধ্বংসের পথে মোগল আমলের মসজিদ



আমিনুল ইসলাম জুয়েল, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, পীরগাছা (রংপুর)
দেয়ালে গজিয়েছে গাছপালা ও লতাগুল্ম এবং গম্বুজে ফাটল ধরেছে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

দেয়ালে গজিয়েছে গাছপালা ও লতাগুল্ম এবং গম্বুজে ফাটল ধরেছে, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে পীরগাছা উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামটি ছিল ইংরেজ বিরোধী বিদ্রোহীদের শক্তিশালী গোপন ঘাঁটি। এই গ্রামেই নির্মিত মসজিদের পাশে ইংরেজদের আক্রমণে নিহত হন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ঐতিহাসিক ‘দেবী চৌধুরাণী’ উপন্যাসের নায়িকা দেবী চৌধুরাণী (প্রফুল্ল)। এই কাহিনী অবলম্বনে কলকাতায় নির্মাণ করা হয়েছে ধারাবাহিক (সিরিয়াল) নাটক, যা বর্তমানে স্টার জলসায় দেখানো হচ্ছে।

জানা গেছে, চন্ডিপুরেই মোগল আমলে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি ছোট্ট তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মসজিদটি ধ্বংসের মুখে আছে। কারণ দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে, দেয়ালে গজিয়ে উঠেছে গাছপালা ও লতাগুল্ম এবং গম্বুজে ফাটল ধরেছে। ইতোমধ্যে চারপাশের চারটি মিনার ধসে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মসজিদের ভেতর প্রবেশের জন্য রয়েছে তিনটি দরজা। উত্তর ও দক্ষিণে দুটি সরু জানালা রয়েছে। পশ্চিম দেয়ালে রয়েছে সুন্দর কারুকার্যের তিনটি মেহরাব। মাঝখানের মেহরাবটি কিছুটা বড়। মেহরাবের বাঁ পাশে আছে তিন সিঁড়ির মেম্বর। তবে দেয়ালের যে অংশে পলেস্তারা এখনো খসে পড়েনি, সেখানে অপূর্ব কারুকার্যের ছাপ লক্ষ্য করা গেছে।

কিছু অংশে এখনো কারুকার্যের ছাপ রয়েছে

মসজিদটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩০ ফুট এবং প্রস্থ প্রায় ১৫ ফুট এবং দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় ৪ ফুট। ভূমি থেকে কার্নিশ পর্যন্ত উচ্চতা ১৫ ফুট। তবে কোনো নামলিপি না থাকায় মসজিদের নির্মাণ সাল নিয়ে মতপার্থক্য আছে। তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এটি মোগল আমলে নির্মিত হয়।

দেবী চৌধুরাণী কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুস ছালাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘সংরক্ষণের অভাবে মসজিদটি অনেক আগেই জৌলুশ হারিয়েছে। তারপরও মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটক আসেন। ফলে মসজিদটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’

স্কুল শিক্ষক ফজলুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘পীরগাছায় এখনো কোনো পর্যটন এলাকা গড়ে ওঠেনি। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ দায়িত্ব নিয়ে সুরক্ষার উদ্যোগ নিলে মসজিদটি একটি বড় নিদর্শন হবে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চন্ডিপুরের গোপন দুর্গ ভবনে নবাব নুরউদ্দিন বাকের জং, ভবানী পাঠক, দেবী চৌধুরাণী ও শিবচন্দ্র রায় মাঝে মধ্যে গোপন সভা করে ইংরেজ বিরোধী সংগ্রামের রণকৌশল নির্ধারণ করতেন। নবাব নুরু উদ্দিন বাকের জং ও দেবী চৌধুরাণীর গোপন দুর্গ ভবন থাকার কারণে চন্ডিপুরের জঙ্গলাকীর্ণ এ স্থানটির নামকরণ হয় পবিত্রকুটি বা পবিত্রঝাড়। ১৭৮৩ সাল পর্যন্ত ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির নেওয়া রাজস্ব নীতি অনুযায়ী বাংলার কৃষকদের থেকে কর আদায়ের জন্য ইজারাদারের লাইসেন্স-ধারক দেবী সিংহের অত্যাচার চরমে ওঠে।

মোগল আমলে নির্মিত মসজিদে অপূর্ব কারুকার্যের ছোঁয়া

লাফিয়ে লাফিয়ে কর বাড়ায় প্রথমে কৃষকরা অর্ধাহার, পরে অভুক্ত অবস্থায় মরতে শুরু করে। এ সময় অত্যাচারী দেবী সিংহের হাত থেকে নিজেদের ও প্রজাদের রক্ষার জন্য মন্থনার জমিদার জয়দুর্গা দেবী চৌধুরাণী ও ইটাকুমারীর জমিদার শিব চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে ইংরেজ কোম্পানির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা হয়। ইতিহাসে এ বিদ্রোহ ‘প্রজা বিদ্রোহ’ হিসেবে পরিচিত। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির ভিত নাড়িয়ে দেওয়া মজনু শাহর নেতৃত্বে ‘ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ’ আন্দোলনেও দেবী চৌধুরাণী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

চন্ডিপুর গ্রামের জঙ্গলাকীর্ণ গোপন ঘাঁটিতে ১৭৮৩ সালের বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বিদ্রোহীদের গোপন আস্তানার সন্ধান পেয়ে আচমকা আক্রমণ শুরু করে লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংসের নেতৃত্বে ইংরেজ বাহিনী। পীরগাছার মন্থনার জমিদার জয়দুর্গা দেবী (দেবী চৌধুরাণী) আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এখানে নিহত হন। তার সঙ্গে নিহত হন ইটাকুমারীর মানব প্রেমিক জমিদার শিবচন্দ্র রায় এবং দেবী চৌধুরাণীর ছোট ভাই কেষ্ট কিশোর চৌধুরীসহ অসংখ্য প্রজা।

লড়াইয়ের মাঠের পাশে রয়েছে দেবী চৌধুরাণীর খননকৃত একটি বিরাট পুকুর। মাঠের মাঝখানে অবস্থিত তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি। ভারতের স্টার জলসা চ্যানেলে ‘দেবী চৌধুরাণী’ নামে যে সিরিয়ালটি (নাটক) দেখানো হচ্ছে, দুই বাংলাতে ব্যাপক জনপ্রিয় এই সিরিয়ালের মূল চরিত্রে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ‘দেবী চৌধুরাণী’কে নিয়ে রচিত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত।

মসজিদের অনেক অংশ ভেঙে গেছে

প্রতি বছর বৈশাখ মাসের প্রত্যেক বৃহস্পতিবার এ স্থানে বসানো হয় নাপাই চন্ডির মেলা। কিন্তু কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে মেলাটির ঐতিহ্য। প্রভাবশালীদের কারণে মাঠের পরিধি ছোট হয়ে আসছে।

রংপুর প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর তাজহাট জমিদার বাড়ির কাস্টোডিয়ান হাসিবুল হাসান সুমি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘পীরগাছার মোগল আমলের মসজিদটি এখনো প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে আমরা খোঁজ খবর নিয়ে তালিকাভুক্ত করার জন্য উপস্থাপন করব।’

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;