শ্রমিকদের পাওনা বকেয়া রেখে ক্যাপিটাল পেপার মিল বন্ধ ঘোষণা
শ্রমিক-কর্মচারীদের ৫ মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া রেখে নরসিংদীর পলাশে অবস্থিত ক্যাপিটাল পেপার এন্ড পাল্ব ও ক্যাপিটাল বোর্ডের উৎপাদন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে মিল কর্তৃপক্ষ।
এর ফলে বেতন-ভাতা প্রদান ও মিল চালুর দাবিতে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা প্রতিদিন মিলের ডিজিএম কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) মিলটিতে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে মিলের সাধারণ শ্রমিক কর্মচারীরা ডিজিএমের কার্যালয়ের সামনে বেতন ও মিল চালুর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করছেন।
এ সময় সাংবাদিকদের কাছে পেয়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, ঈদুল আজহার ছুটিতে মিলের উৎপাদন বন্ধ করার পর আজ অবদি মিলের উৎপাদন চালু করেনি মিল কর্তৃপক্ষ। কারখানায় কর্মরত ২০০ জন শ্রমিক-কর্মচারী বিগত ৫ মাস ধরে বেতন-ভাতা না পেয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে।
মিলের শ্রমিক ফিরোজ আক্তার জানিয়েছেন, বেতন না পেয়ে আমরা অতি কষ্টে ছেলে-মেয়ে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছি। অনেক শ্রমিক রিক্সা-ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন।
আরেক শ্রমিক সালাউদ্দিন বলেন, চলতি মাসের বেতনসহ ৫ মাসের বেতন ও ৭ মাসের ওভারটাইম না দিয়ে মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। ফলে মিলে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
মিল সূত্রে জানা যায়, ১৪০ টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ক্যাপিটাল পেপার এন্ড পাল্ব ও ক্যাপিটাল বোর্ডের ২টি গ্যাস সংযোগ রয়েছে। মিলের কাছে ৭ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় একটি সংযোগ জুলাই মাসে, অপরটি আগস্ট মাসে বিচ্ছিন্ন করে দেয় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কারণে শ্রমিকদের মধ্যে আরও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মিলটি আদৌ চালু হবে কি-না এ বিষয়ে সুষ্পষ্টভাবে কিছুই বলছে না কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাবের-উল-হাই জানান, মিলটি হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ায় দুই শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীর পরিবার মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এক সময় মিলটি ভালো চলতো। মিল কর্তৃপক্ষের কাছে আমরাও দাবি জানিয়েছে, অবিলম্বে মিলটি চালু করা হোক, নয়তো শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের ব্যবস্থা করা হোক।
এ বিষয়ে মিলের ডিজিএম মীর আলী জানান, আগামী নভেম্বর মাসের ২১ তারিখে মিলের গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে এবং মিলটি চালু করারও চিন্তা-ভাবনা করছেন কর্তৃপক্ষ। মিলের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ার কারণে মিলটি লোকসানের মধ্যে পরে গেছে।