বিনাদোষে কারাবন্দি কলেজছাত্র নয়নের জামিন
বিনাদোষে ২৮ দিন কারাভোগের পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন কলেজছাত্র নয়ন।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সখিপুর আমলি আদালতের বিচারক আকরামুল ইসলাম তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
বাবুল হোসেন নয়ন সখিপুর উপজেলার প্রতিমা বংকী গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে। বাবুল হোসেন নয়ন সরকারি মুজিব কলেজ থেকে ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। এর আগে বাদীর মিথ্যা অভিযোগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বাবুল হোসেন নয়নের আইনজীবী সেলিম আলদীন বলেন, এ মামলার আসামি যেহেতু বাবুল হোসেন নয়ন না, এজন্য আদালতে জামিন আবেদন করলে বিচারক ওই কলেজছাত্রের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বিকালে জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছানোর পর বিনাদোষে কারাবন্দি কলেজছাত্রের মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে’।
বাবুল হোসেন নয়নের বাবা শাহজাহান আলী বলেন, ‘দীর্ঘ ২৮ দিন পর আমার নির্দোষ ছেলেটির জামিন হয়েছে। খুব দ্রুত এ মামলা থেকে তাকে অব্যাহতির দাবি জানান তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সখিপুর থেকে বাসাইল উপজেলায় বেড়াতে এসে গত ২১ সেপ্টেম্বর এক স্কুলছাত্রী নিখোঁজ হন। এর চারদিন পর টাঙ্গাইল ডিসি লেকের পাশ থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তার পরিবার। শুরুতে মেয়েটি নয়ন নামের এক ছেলের সঙ্গে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিল বলে জানায়। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর মেয়েটির মা বাদী হয়ে প্রতিবেশী বাবুল হোসেন নয়নকে আসামি করে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। পুলিশ বাবুল হোসেন নয়নকে গ্রেফতার করলে তাকে ধর্ষক হিসেবে চিহ্নিত করে মেয়েটি। ওই সময় বাবুল হোসেন নয়নকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে আদালতে হাজির করা হলে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন বিচারক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সখিপুর থানার এসআই আসাদুজ্জামান বলেন, ‘জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ও বাবুল হোসেন নয়ন নিজেকে বারবার নির্দোষ দাবি করেন। মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হওয়ায় অধিকতর গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করি। মেয়েটির কাছ থেকে পাওয়া কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেলের বিজনেস কার্ডের সূত্র ধরে তদন্ত করা হয়। এক পর্যায়ে জানা যায়, বাবুল হোসেন নয়ন নয়, বরং নয়ন মিয়া ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই বিজনেস কার্ডের মোবাইল নম্বর ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে মামলার প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হয়। পরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৭ অক্টোবর প্রকৃত আসামি নয়ন মিয়াকে বাসাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার নয়ন মিয়া ওই ছাত্রীকে কক্সবাজারের একটি হোটেলে রেখে ধর্ষণ করেছে বলেও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এ মামলার মূল অভিযুক্ত নয়ন মিয়া বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের বাঘিল গ্রামের ফারুক ওরফে নূহু মিয়ার ছেলে।