ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরীর প্রাণ ফেরানোর উদ্যোগ
রংপুর মহানগরীর ১৩০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী খাল শ্যামাসুন্দরীর প্রাণ ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর চেকপোস্ট মোড়ে খালের সীমানা নির্ধারণ, পুনরুদ্ধার ও পুনরুজ্জীবন কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়।
রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কেএম তারিকুল ইসলাম।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কেএম তারিকুল ইসলাম শ্যামাসুন্দরী খালের পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এবং দখলদারদের কাছে জিম্মি শ্যামাসুন্দরী খাল উদ্ধারের কথা বলেন।
তিনি বলেন, পাঁচ শতাধিক দখলদারের কবলে শ্যামাসুন্দরী খালের বিস্তৃতি দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। এই খাল পুনরুজ্জীবন ও সচল রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ছাফিয়া খানম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু মারুফ হোসেন, সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু, রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হারুনার রশীদ, নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহামুদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, শ্যামাসুন্দরী খাল রংপুরবাসীর জন্য আশীর্বাদ। ১৩০ বছর আগে ১৮৯০ সালে এই খালটির উদ্বোধন করেন স্যার স্টুয়ার্ট কেভিন বেইলি। পুরাতন এই খালটি তৎকালীন পৌরসভার চেয়ারম্যান ও ডিমলা রাজা জানকি বল্লব সেন তার মা শ্যামাসুন্দরীর স্মরণে খনন করেছিলেন। নগরীর সিও বাজার এলাকার ঘাঘট নদীর উৎস মুখ থেকে শুরু হয়ে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ শ্যামাসুন্দরী খালটি নগরীর ভিতর দিয়েখোকসা ঘাঘটের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
বর্তমানে খালটির ময়লায় পূর্ণ হয়ে গেছে। সংস্কার না করার কারণে মশার আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। ২৩ থেকে ৯০ ফুট প্রশস্ত খালটি বর্তমানে ৮ থেকে ১০ ফুটে পরিণত হয়েছে। ৪’শ ৮২ জন দখলদারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে খালটি। অনেকে বাড়ির পয়ঃনিষ্কাশনের লাইন খালের সঙ্গে সংযোগ করে দিয়েছেন। ফলে খালের পরিবেশ বিনষ্ট হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সময়ে খালের সংস্কার, খনন, উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
রংপুর সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের তত্ত্বাবধানে শ্যামাসুন্দরী খাল পুনরুজ্জীবন ও সচল রাখার রাখার প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রকল্পের পরিকল্পনা প্রেরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শ্যামাসুন্দরী খাল দখলদারদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
এসময় রংপুর বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরসহ ক্যান্টনমেন্টের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।