চুয়াডাঙ্গায় ৬০ শতাংশ গরু লাম্পি স্কিন ভাইরাসে আক্রান্ত
চুয়াডাঙ্গার ৬০ শতাংশ গরু লাম্পি স্কিন নামের এক ধরনের ভাইরাস রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। ফলে প্রতিদিনই এই ভাইরাসে আক্রান্ত শতাধিক গরু চিকিৎসা নিতে জেলা পশু হাসপাতালে আসছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছরই প্রথম গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে দেশে। আর চলতি মাসের শুরুতে চুয়াডাঙ্গায় লাম্পি স্কিন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় শতকরা ৬০ ভাগ গরুই এখন লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত। ইতোমধ্যে লাম্পি স্কিন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গায় ছয়টি গরু মারা গেছে। ফলে আতঙ্কে আছেন খামারিরা। অনেকে ভয়ে অল্প দামে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন। লাম্পি স্কিন এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। তবে গরু এই রোগে আক্রান্ত হলে ভয়ের কোনও কারণ নেই। চিকিৎসা করালে গরু ভালো হয়ে যায়। তবে চিকিৎসা না করালে গরু মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে গ্রামে গ্রামে মাঠকর্মীদের সতর্কভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাধারণত লাম্পি স্কিন আক্রান্ত গরুর পেটের নিচে পানি জমে, শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায় ও শরীরে গুটি বের হয়। এদিকে ভাইরাসজনিত রোগ লাম্পি স্কিম আক্রমণে খামারের গরুর মালিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ায় খামারিরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত খামারিরা পশু হাসপাতালে তাদের লাম্পি স্কিম আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসছেন।
চুয়াডাঙ্গা জফরপুরের গরুর খামারি আব্দুর রশীদ সম্প্রতি তার খামারের আক্রান্ত ছয়টি গরুর চিকিৎসা করাতে পশু হাসপাতালে আসেন। তিনি জানান, প্রথমে তার খামারের একটি গরুর শরীরে গুটি দেখা যায়। কয়েকদিন পরই অন্য গরুগুলোরও একই সমস্যা দেখা যায়।
চুয়াডাঙ্গা হাজরাহাটি গ্রামের কুলসুম আরা জানান, তার বাড়ির গরুটিই একমাত্র সম্বল। হটাৎ করেই তিনি দেখতে পান গরুর পা ফুলে গেছে এবং শরীরে গুটি বের হয়েছে। পরে পশু হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা জানান গরু ভাইরাস রোগে আক্রান্ত।
দামুড়হুদা উপজেলার খামারি মজিবর রহমান জানান, গত কোরবানি ঈদে গরু বিক্রি না হওয়ায় খামারে রেখে দেওয়া হয় কয়েকটি গরু। কিন্তু গরুগুলো লাম্পি স্কিমে আক্রান্ত হওয়ায় লোকসানে বিক্রি করে দিয়েছেন। বাকি যে গরুগুলো রয়েছে সেগুলো একই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মো. গোলাম মোস্তফা বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘লাম্পি স্কিম ভাইরাস সাধারণত মশা-মাছি আর অপরিচ্ছন্ন জায়গা থেকে গরুর শরীরে প্রবেশ করে। এ ভাইরাস সাত থেকে দশ মাস পর্যন্ত গরুর শরীরে থাকতে পারে। তবে নিয়মিত চিকিৎসা করালে এই রোগ ভালো হয়।’