হাজীগঞ্জ দুর্গকে ঘিরে সম্মিলিত উচ্ছেদ অভিযান
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১১নং ওয়ার্ডে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আওতাধীন হাজীগঞ্জ দুর্গের চতুর্দিকে সম্মিলিত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর থেকে হাজীগঞ্জ দুর্গের চতুর্দিকে অবৈধভাবে দখল করে গড়ে তোলা বিভিন্ন স্থাপনায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে প্রায় ১২টি গোডাউন ধ্বংস করে দেওয়া হয়। উচ্ছেদ করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- রকি প্রিন্ট-১ ও ২, রাসেল ওয়াশিং-১ ও ২, আনোয়ার অ্যান্ড ব্রাদার্স, নিলিমা কটন, ব্রাইট প্যাকেজিং, সোনালি, বিসমিল্লাহ ও আশরাফ প্যাকেজিং সহ আরও বেশ কয়েকটি অবৈধ স্থাপনা।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান বিন মুহাম্মাদ আলী বলেন, 'হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী এই অভিযানটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশনসহ আরও বেশ কয়েকটি দফতরের সমন্বয়ে চালানো হয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আগারগাঁও আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক রাখী রায় বলেন, 'হাজীগঞ্জ দুর্গটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আওতাধীন। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী এখানে অভিযান পরিচালিত হবে জেনে এখানে পরিদর্শন করতে আমরা এসেছি। অভিযানে যাতে প্রত্নতত্ত্ব সম্পদের কোনো ক্ষতি না হয় এ বিষয়ে আমরা দেখভাল করছি।'
অভিযানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর আগারগাঁও আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক রাখী রায়, উপ-পরিচালক লাভলী ইয়াসমিন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান বিন মুহাম্মাদ আলী, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হোসেন, বাজার কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম সহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্য ও নাসিকের পরিচ্ছন্নকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উইকিপিডিয়ায় পাওয়া তথ্যমতে, হাজীগঞ্জ দুর্গ মুঘল আমলে নির্মিত একটি জল দুর্গ। নারায়ণগঞ্জের সিটি করপোরেশন ১১নং ওয়ার্ডের হাজীগঞ্জ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। এটি খিজিরপুর দুর্গ নামেও পরিচিত। ঢাকা শহরকে রক্ষা করতে সপ্তদশ শতকের আগে পরে যে তিনটি জল দুর্গকে নিয়ে ত্রিভুজ জল দুর্গ বা ট্রায়াঙ্গল অব ওয়াটার ফোর্ট গড়ে তোলা হয়েছিল তারই একটি হলো এই হাজীগঞ্জ দুর্গ।
ধারণা করা হয়, মুঘল সুবেদার ইসলাম খান কর্তৃক ঢাকায় রাজধানী স্থাপনের পরে নদীপথে মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশে দুর্গটি নির্মাণ করা হয়।
এদিকে হাজীগঞ্জ দুর্গের চতুর্দিকে সমন্বিত অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তারা জানান, রাত নামলেই এই এলাকাটি অপরাধী আর নেশাখোরদের অভয়ারণ্যে হয়ে ওঠে। হাজীগঞ্জ দুর্গের মতো ঐতিহাসিক জায়গাটি এতদিন অবহেলায় পড়েছিল। মানুষজন ঘুরতে যেতেও সাহস পেত না। জায়গাটি যদি পরিচ্ছন্ন করে সুন্দর করে গড়ে তোলা হয় তবে জেলার পর্যটন খাত আরও সমৃদ্ধ হবে।