৭ বছর ধরে শিকলবন্দী ২ সন্তানের জননী
পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের হরেয়াপাড়া এলাকার কলিম উদ্দিনের মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে করছিনা বেগম (২৮)। দীর্ঘ সাত বছর ধরে এক অন্ধকার ঘরে এক পায়ে লোহার শিকল বাঁধা অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটছে তার। দিনের বেলায় স্বাভাবিক থাকলেও রাতের অন্ধকারে চিৎকার ও কান্না করেন। এতে তার পরিবার এবং প্রতিবেশীদের ঘুমে বিঘ্ন ঘটে। তাই মাঝে মাঝে তাকে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়।
জানা গেছে, ১৩ বছর পূর্বে জেলার পার্শ্ববর্তী তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের মানিকডোবা এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেনের সঙ্গে করছিনার বিয়ে হয়। পাঁচ বছরের সংসার জীবনে তাদের ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নেয়। ধীরে ধীরে করছিনার আচরণগত পরিবর্তনের কারণে স্বামী তাকে তালাক দেন। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের সাত বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও মানসিক ভারসাম্যহীন করছিনা তার স্বামী সন্তানের কাছে ফিরে যেতে চান।
করছিনার বাবা কলিম উদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘মেয়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমার সব কিছু শেষ। অভাবের কারণে এখন আর আমার মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না। ফলে দুশ্চিন্তায় দিনরাত কাটাতে হচ্ছে।’
সাতমেড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘করছিনার অসুস্থতার কারণে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে দুই বছরের জন্য তার পরিবারকে একটি ভিজিডি কার্ডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে পঞ্চগড় সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মামুন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘করছিনার পরিবার যদি আগ্রহী থাকে, তাহলে আমাদের সমাজসেবার অন্তর্গত রোগী কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।’