মাইন অপসারণে সৌদিতে সেনা মোতায়েন প্রক্রিয়াধীন

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, নাটোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, ছবি: সংগৃহীত

আন্তঃরাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে মাইন অপসারণে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে সেনা সদস্য মোতায়েনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেছেন, ‘এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ৭০০ সদস্যের দুটি ডি-মাইনিং ব্যাটালিয়ন এবং ডিএমসি সদর দফতরের সঙ্গে ১৮ জন সদস্যের জনবল সৌদি আরবের জাযান ও নাজরান এলাকায় নিয়োজিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ থেকে ‘মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং’ সৌদি কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে, যা অনুমোদনের পর চূড়ান্তভাবে কার্যক্রম শুরু করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে ১ও ৮ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন এবং ৫ ও ৭ আর ই ব্যাটালিয়নকে রেজিমেন্টাল কালার প্রদান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

আধুনিক, যুগোপযোগী ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে সেনাবাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামো বিন্যাস ও পরিবর্তনের পাশাপাশি আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অন্যান্য আর্মস ও সার্ভিসের সঙ্গে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের আধুনিকায়নেও কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া সদরদফতর ২৪ এবং ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের অধীনে ইতিমধ্যে দুটি ইসিবি ব্যাটালিয়নের (এডহক) সাংগঠনিক কাঠামো স্থায়ীকরণের কাজ চলমান রয়েছে। তৃতীয় ইসিবি ব্রিগেড হিসেবে আরও একটি ব্রিগেডের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর অধীনে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি পারমাণবিক ও ভৌত সুরক্ষা ব্যবস্থা সেলের (এনএসপিপি) সাংগঠনিক কাঠামোয় একটি কম্পোজিট ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া এবং কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের গুণগত মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন এটিপি প্রণয়নসহ নির্দিষ্ট আরও ২০টি এটিপি প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে সেনাবাহিনী অংশীদার থাকতে চায় মন্তব্য করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলাসহ আর্থসামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সেনাবাহিনী অভূতপূর্ব অবদান রেখে চলেছে। এ ক্ষেত্রে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে সদরদফতর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন বিগ্রেড বর্ডার রোড প্রজেক্ট বাস্তবায়নের কাজ পরিচালনা করছে।’

স্যাপার্স সদস্যদের মৌলিক প্রশিক্ষণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে অত্যাধুনিক ও বাস্তবসম্মত প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। তাই মৌলিক প্রশিক্ষণের উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সর্বোচ্চ ব্যাবহারের জন্য প্রশিক্ষণেও উৎকর্ষতা আনতে হবে। কোনো প্রশিক্ষণই ফলপ্রসূ হবে না যদি মৌলিক প্রশিক্ষণে ঘাটতি থাকে।’

প্যারেড ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সেনাপ্রধান বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কোনো একটি বিশেষ দেশ থেকে সমরাস্ত্র ক্রয়ের পক্ষে নই আমরা। আমরা প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গেই করতে আগ্রহী। দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী এখন। তাই উন্নতমানের ট্যাংক, মিসাইলসহ যুদ্ধ সরঞ্জাম কেনা হচ্ছে। আমরা দাম দিয়ে ভালো জিনিসই কিনব। পাশাপাশি প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সাহায্য নেওয়া শুরু হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল, সেনাবাহিনীর বগুড়া এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল সাইফুল আলম, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এ কে এম হাফিজ আকতার, অবসরপ্রাপ্ত সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারুন-অর-রশীদ, কাদিরাবাদ সেনানিবাসের কমান্ড্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশরাফুল ইসলাম, নাটোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহরিয়াজ, পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহাসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারা এবং ইঞ্জিনিয়ার কোরের সামরিক ও অসামরিক সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।