মৃত্যুর পর ‘রাষ্ট্রীয় মর্যাদা’ না দিতে মুক্তিযোদ্ধার আবেদন

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, পঞ্চগড়
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যুর পর ‘রাষ্ট্রীয় মর্যাদা’ না দিতে মুক্তিযোদ্ধার আবেদন, ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুর পর ‘রাষ্ট্রীয় মর্যাদা’ না দিতে মুক্তিযোদ্ধার আবেদন, ছবি: সংগৃহীত

ছেলের চাকরি না হওয়ায় এক মুক্তিযোদ্ধা ক্ষোভে মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা না দিতে জেলা প্রশাসক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বরাবর এমন চিঠি প্রদান করেন জেলার আটোয়ারী উপজেলার কাটালী মীরপাড়া এলাকার অভিমানী বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিম উদ্দিন। চিঠির অনুলিপি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীসহ বিভিন্ন সরকারি ও প্রশাসনিক দপ্তরেও পাঠিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

চিঠিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিম উদ্দিন বলেন, ‘সম্প্রতি আটোয়ারী উপজেলার ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। আমার সন্তান দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে আবেদন করে এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। আমার সন্তান যোগ্য ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় প্রার্থী হওয়ায় তার চাকরি নিশ্চিত ছিলো। কিন্তু তার পরও তাকে চাকরি না দেওয়ায় আমি অত্যন্ত হতাশ।’

নিয়োগের সময় মুক্তিযোদ্ধার কোটা না মেনে নিয়োগ কমিটি সাদেকুল ইসলাম নামে অন্য এক প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়। এই অনিয়মের অভিযোগে নিয়োগ কমিটির সভাপতি আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিম উদ্দিন সহকারী জজ আদালতে (আটোয়ারী) মামলা দায়ের করেন। আদালতে বিচারাধীন মামলাটি একটি প্রভাবশালী মহল প্রত্যাহারের জন্য তাকে ও তার ছেলে সাহিবুল ইসলামকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে- বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

চাকরির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না মানায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে। তাই এই অনিয়মের বিচার না হলে এই মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিতে নিষেধ করে চিঠি লিখেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিম উদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ‘আমার ছেলে যোগ্য প্রার্থী হওয়ার পরও ঘুষ দিতে পারেনি বলে ওরা আমার ছেলেকে চাকরি দেয়নি, আমার ছেলে আনসার-ভিডিপির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তাকে চাকরি না দিয়ে যে মোটা অংকের টাকা দিয়েছে, তাকে চাকরি দিয়েছে তারা। আমি মামলা করেছি এই অনিয়মের বিচারের দাবিতে। আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, আমি দেশ স্বাধীন করেছি অথচ আমাকেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এটাই কি ভাগ্যে ছিল আমার?’

তিনি আরও জানান, এমন অনিয়মই যদি দেখতে হয়; তাহলে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম কেন? এ ঘটনার বিচার না হলে মৃত্যুর পর আমি রাষ্ট্রীয় সম্মান চাই না।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখবো।’