পীরগাছার কুচিয়া রফতানি হচ্ছে বিদেশে

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, পীরগাছা (রংপুর)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কুচিয়া মাছ। ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

কুচিয়া মাছ। ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

বিদেশে প্রচুর চাহিদার কারণে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার আদিবাসীদের সংগ্রহ করা কুচিয়ার কদর বেড়েছে। আদিবাসীদের সংগ্রহ করা কুচিয়া এখন চীন, হংকং, তাইওয়ান ও আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। আর এ কুচিয়া ধরে স্থানীয় আড়তে বিক্রি করে উপজেলার ইটাকুমারী ইউনিয়নের আদিবাসী পল্লীর প্রায় শতাধিক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে।

আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বংশপরম্পরায় খাল, বিল, নদী ও ডোবাসহ বিভিন্ন জলাশয় থেকে কুচিয়া মাছ সংগ্রহ করে তারা। এই কুচিয়া বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে। তবে আগে বাজারে কুচিয়ার তেমন চাহিদা ছিল না। দামও ছিল কম। কিন্তু বিদেশে রফতানি শুরু হওয়ার পর থেকে কুচিয়ার কদর বেড়েছে। বেড়েছে দামও। কুচিয়া মাছ কেনার জন্য পীরগাছার কল্যাণী ইউনিয়নের তালুক কল্যাণী গ্রামে গড়ে উঠেছে আড়ত। আড়ত থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রচুর পরিমাণে কুচিয়া মাছ বিদেশে রফতানির জন্য ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে।

কুচিয়া মাছ মূলত অঞ্চলভেদে কুচে, কুইচ্চা নামে পরিচিত। রাক্ষুসে স্বভাবের এ মাছের প্রধান খাদ্য বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছ, জলজ পোকা ও প্রাণী। এরা মূলত অদ্ভুতভাবে মুখ দিয়ে বাচ্চা জন্ম দেয়। একটি মা মাছ একসঙ্গে সহস্রাধিক বাচ্চা জন্ম দিতে পারে। বছরের নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত কুচিয়া মাছ ধরার মৌসুম। তবে এপ্রিল মাসে বেশি পরিমাণে কুচিয়া মাছ পাওয়া যায়। বিশেষ করে কুচিয়া মাছ মানুষ বিভিন্ন রোগের প্রতিকারের জন্যও খেয়ে থাকেন। প্রতিদিন একজন জেলে গড়ে ৪ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত কুচিয়া মাছ ধরতে পারেন।

বিজ্ঞাপন

আদিবাসী পল্লীর জেলে নিমাই বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘পুকুর অথবা জলাশয়ের ধারে ছোট ছোট গর্ত চিহ্নিত করে কুচিয়া মাছ ধরি। এসব কুচিয়া স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা আড়তে বিক্রি করি।’

সরেন প্রিয় নামে আরেক জেলে জানান, প্রতিদিন সকালে দল বেধে কুচিয়া ধরতে বের হন তারা। সাধারণত প্রতি দলে সদস্য থাকেন ২ থেকে ৩ জন। প্রতিটি দল সারাদিনে গড়ে ৪ থেকে ৭ কেজি কুচিয়া সংগ্রহ করতে পারেন। দিন শেষে কুচিয়াগুলো আড়তে বিক্রি করে ৬শ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এভাবে কুচিয়া মাছ বিক্রি করে শতাধিক আদিবাসী পারিবারের সংসার চলছে।

বিজ্ঞাপন

আড়তদার আনোয়ার হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমরা সরাসরি কুচিয়া বিদেশে পাঠাতে পারি না। আমরা স্থানীয় ভাবে সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠাই। সেখান থেকে ঢাকার আড়তদাররা চীন, হংকং, ভারত ও আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতারি করেন।’