বুলবুলের আঘাতে বিপাকে মেহেরপুরের কৃষক
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর প্রভাবে গেল দুদিন ধরে বৃষ্টিপাত হচ্ছে মেহেরপুরে। তবে রোববার (১০ নভেম্বর) ভোর রাত থেকে কমেছে বৃষ্টি। হালকা বাতাস প্রবাহিত হলেও, বৃষ্টি না হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে চাষিদের মনে। তবে সর্বশেষ দুদিনের বৃষ্টি ও বাতাসের প্রভাবে মাঠে থাকা আমন ধান নুইয়ে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন জেলার কৃষকরা।
জেলার বিভিন্ন মাঠ আমন ধানে পরিপূর্ণ। বেশিরভাগ ক্ষেতের ধান কাটার উপযোগী। সপ্তাহ খানেক আগে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ সপ্তাহ থেকে পুরোপুরি কাটা ও মাড়াই শুরু হতো। কিন্তু বৃষ্টির প্রভাবে একাজ করতে পারছেন না কৃষকরা। অপরদিকে বাতাসের প্রভাবে মাঠের পর মাঠের ধান মাটির সঙ্গে নুইয়ে পড়েছে। এর মধ্যে পাকা ও আধা পাকা ধানও রয়েছে। মাঠের যে দিকে নজর যায় সেদিকেই ধান গাছের নুইয়ে পড়ার দৃশ্য।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার তিনটি উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। আর চাষিরা স্বর্ণা জাতীয় ধানের আবাদ বেশি করেছেন। কিন্তু এই জাতীয় ধান বৈরী আবহাওয়ায় সহনশীলতা কম। সামান্য বাতাসেই নুইয়ে পড়ে। এতে ফলন কমে যায়। অপরদিকে কয়েকগুণ বাড়ে শ্রমিক খরচ।
এ বিষয়ে চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, পাকা ধান যেগুলো নুইয়ে গেছে তাতে খুব বেশি সমস্যা নেই। তবে আধা পাকা ধানগুলোর ফলনে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।
তবে বৃষ্টিতে সবজি চাষিদের উপকার হয়েছে বলে জানান তহসিন আলী নামের এক সবজি চাষি। তিনি বলেন, যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে সবজির ক্ষতির চেয়ে উপকারই বেশি হবে। আর যদি বৃষ্টি না হত তাহলে ক্ষতি হবে না।
কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত বিভিন্ন জাতের ধান আবাদ করলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না। আমন, আউশ ও বোরো মৌসুম এদেশে চাষ উপযোগী নানা প্রকার জাত উদ্ভাবন করেছে ব্রি। যা দুর্যোগ সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল। তবে চাষিরা পুরাতন প্রথা থেকে বের হতে পারে না বিধায়, স্বর্ণা ধান আবাদেই আটকে আছে। তবে আশার কথা হচ্ছে এখন অনেক চাষি ব্রি জাতের ধান আবাদে অভ্যস্ত হচ্ছেন।