সাতক্ষীরায় ৪৮ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, ফসল-মাছের ঘেরের ক্ষতি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, খুলনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

সাতক্ষীরা থেকে: ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সাতক্ষীরায় অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে তলিয়ে গেছে শত শত বিঘার ফসলি জমি ও মাছের ঘের।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সাতক্ষীরায় রোববার (১০ নভেম্বর) রাত ৩টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত প্রবল বেগে দমকা হওয়া বয়ে গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর তীব্রতা কমতে থাকে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, শ্যামনগর, আশাশুনি উপজেলাসহ উপকূলীয় এলাকার ১৬ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও ৩২ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। মোট ৪৮ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

এছাড়া ১৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উপকূলীয় উপজেলায় শতশত বিঘা মাছের ঘের ও ফসলি জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে, এখনো পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

বিজ্ঞাপন
বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

মূলত সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় ৬ লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে শনিবার রাত পর্যন্ত ১ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়েছিল।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ২২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ, নৌবাহিনী ও ১০০ জন সেনা সদস্য উপকূলীয় এলাকায় জানমাল রক্ষায় কাজ করছেন। উপকূলীয় এলাকা শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলায় কাঁচাঘর বাড়ি, মৎস্য ঘের ও ফসলি জমিও রাস্তঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব অঞ্চলে প্রায় ৬০-৭০ ভাগ ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ধসে পড়েছে। একই সঙ্গে তলিয়ে গেছে চিংড়ির ঘের।

শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ঝড়ের দাপটে গাবুরা ইউনিয়নের ৮০ শতাংশ কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্গাবাটি, দাতিনাখালি ও চৌদ্দরশি বাঁধ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সড়কের উপরে গাছ ভেঙে পড়েছে। বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

তিনি আরও জানান, নদীতে এ সময় ভাটা থাকলেও ঝড়ের তাণ্ডবে পানি বেড়িবাঁধ পর্যন্ত ছুঁয়ে যায়। রাস্তায় গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পুরো এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গাবুরা, পদ্মপুকুর, আটুলিয়া, কাশিমারিসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের শত শত চিংড়ির ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।

এদিকে বুলবুলের আঘাতে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে সকালে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার সময় গাবুরায় আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এছাড়া বাড়িঘর পড়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের উপ-পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, রাত ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮১ কিলোমিটার। তবে দুপুর থেকে পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।