পেঁয়াজের দামে পিছিয়ে নেই টাঙ্গাইলও
সারাদেশের পেঁয়াজের দামের তুলনায় পিছিয়ে নেই টাঙ্গাইল জেলাও। জেলার সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলোতে ২৪০-২৫০ টাকায় দরে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শীতের সবজির দামও বেড়ে চলেছে। ফলে সব শ্রেণির ক্রেতারা চাহিদানুযায়ী শীতের সবজি কিনতে পারছেন না।
টাঙ্গাইল শহরের পার্কবাজার, ছয়আনী বাজার, আমিন বাজার (গোডাউন বাজার), সাবালিয়া বাজার, নতুন বাস টার্মিনাল বাজার, বটতলা বাজার, বৈল্যা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতের আগাম সবজি ফুলকপি প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৩০-৪০ টাকা, লাল শাক ২৫-৩০ টাকা, টমেটো (বিদেশি) ৮০-১০০ টাকা, গাজর (বিদেশি) ৯০-১০০ টাকা, পালং শাক ৩০-৪০ টাকা, ধনে পাতা ১০-১১০ টাকা, শিম ৫০-৬০ টাকা, শসা ৭০-৮০ টাকা, মূলা ৩০-৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা, ঝিঙে ৪০-৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০-৬০ টাকা, জলপাই ২০-২৫ টাকা, আলু (নতুন) ৯০-১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া সব সময়ের সবজি আলু (প্রকারভেদে) ৩০-৬০ টাকা, পেঁপে ২০-৩০, কাঁচকলা ৩০-৩৫ টাকা (প্রতি হালি), প্রতি কেজি করলা ৫০-৬০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৪০-৫০ টাকা, লাউ (মাঝারি সাইজ) ৫০-৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ের বাজারগুলোতে একই দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, বছরের এই সময়ে শীতকালীন সবজির দাম সাধারণত নাগালের বাইরে থাকে। কিন্তু এবার আগাম শীতের সবজি বাজারে বেশি আমদানি হওয়ায় দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই।
তারা আরও জানান, দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে শীতের সবজি আগে বাজারে আসে। এবার টাঙ্গাইলের কৃষকরাও শীতকালীন সবজির আগাম চাষ করায় সেগুলো বাজারে উঠেছে। ফলে আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে আগেই এসেছে। দাম সামান্য কিছুটা বেশি হলেও সব ধরনের ক্রেতারা সবজি কিনতে পারছেন।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলে পেঁয়াজের দাম গত দুইদিনের ব্যবধানে ৯০-১০০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় হতাশ ক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বিকালে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছিল ১৮০-১৯০ টাকা, শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে বেড়ে হয়েছে ২৪০-২৫০ টাকা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রশাসন থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম নিচ্ছে। যারা পেঁয়াজ গুদামজাত করে ব্যবসা করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। আর এটা বাস্তবায়িত হলে বাজারে পেঁয়াজের দাম অর্ধেকে নেমে আসবে।
পেঁয়াজ চাষিরা জানান, তাদের জমির পেঁয়াজ এখনো বিক্রি করার উপযোগী হয়নি। বাজারের পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা পেঁয়াজের উপরের অংশ বাজারে বিক্রি করে বেশ ভালো দাম পাচ্ছেন। এতে তারা খুশি।
এদিকে পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি করায় কয়েক উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে অর্থদণ্ড প্রদান করেছে প্রশাসন। তারপরও পেঁয়াজের দাম নিম্নমুখী না হয়ে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।
ভুঞাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসলাম হোসাইন জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার গোবিন্দাসীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাঁচজন পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোশারফ হোসেন খান জানান, দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি মনিটরিং করে থাকে। পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির বিষয়ে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন বাজারে দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হবে।