মর্গ থেকে ভেসে আসে হাতুড়ি পেটানোর শব্দ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, যশোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গ

যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গ

যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গের ভেতর থেকে অদ্ভুত এক আওয়াজ ভেসে আসে। শুনলে মনে হয় হাতুড়ি পেটানোর শব্দ। মর্গের দরজার সামনে গেলে আওয়াজ বাড়তে থাকে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে এমনই পরিবেশের দেখা পাওয়া যায়।  আশপাশের লোকজনের কাছে শব্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলে, মর্গে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মরদেহের মাথা ভাঙা হচ্ছে। এমন শব্দ প্রায়ই হয়। এছাড়া মাঝে মাঝে মরিচা ধরা ছেনি দিয়েও মাথার খুলি খোলা হয়। ময়নাতদন্ত কাজে ব্যবহৃত ছুরিগুলোও ভোতা। দেখলে মনে হবে তাতে দীর্ঘদিন শান দেয়া হয়নি। আধুনিক কোনো যন্ত্রপাতি না থাকায় এভাবেই মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, গত বছর আধুনিক যন্ত্রপাতির চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো সাড়া মেলেনি।

বিজ্ঞাপন
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, যশোর

আরো জানা গেছে, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসাসেবা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা হয়েছে। বাদ দেয়া হয়েছে মান্ধাতার আমলের সকল যন্ত্রপাতি। বর্তমানে চলছে ডিজিটাল মেশিনে কার্যক্রম। কিন্তু হাসপাতাল মর্গের দিকে কর্তৃপক্ষের নজর নেই। তাছাড়া মর্গে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় মরদেহ টেবিল ও ফ্লোরে রাখা হয়। মর্গে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের জন্য কোনো স্টাফ বা লোকবলও নেই। অথচ জেলা বা উপজেলায় হত্যা বা রহস্যজনক মৃত্যু হলে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পাঠানো হয় এই মর্গে।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে (১৭ নভেম্বর পর্যন্ত) এই মর্গে অর্ধশতাধিক লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন
ময়নাতদন্তের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানান, নামেই এখানে মর্গ। কোনো ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নেই। অনেক পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করতে হয়। লাশ সংরক্ষণ করার ফ্রিজটিও মাসের পার মাস অকেজো হয়ে আছে। এক কথায় হাসপাতাল মর্গের দিকে কর্তৃপক্ষের খেয়াল নেই।

মরদেহ কাটার কাজে নিয়োজিত লক্ষণ জানান, মর্গে যন্ত্রপাতির বেহাল অবস্থা। ফলে গায়ের জোরে মরদেহ কাটতে হয়। তাছাড়া মর্গের ভেতর পানির ট্যাবগুলোও নষ্ট।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, আগে হাসপাতাল মর্গে নানা সমস্যা ছিল। এখন সেখানে কয়েকটি নতুন এসি লাগানো হয়েছে। মর্গের অবকাঠামোও উন্নত হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতির চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখন শুধু অনুমোদনের অপেক্ষা।