কুষ্টিয়া শহরে নেই স্বাস্থ্যসম্মত গণশৌচাগার
কুষ্টিয়া শহরের পাবলিক টয়লেট বা গণশৌচাগার নেই বললেই চলে। শহরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, রেলওয়ে স্টেশন, বাজারসহ জনসমাগমের স্থানে নেই পাবলিক টয়লেট।
এনএস রোডের থানার পাশে পাবলিক টয়লেট ছিলো সেটি এখন আর নেই। মিউনিসিপ্যালিটি সুপার মার্কেটের পাবলিক টয়লেটিরও বেহাল দশা। এছাড়াও কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ডায়েরিয়া ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডের টয়লেট ব্যবস্থা বেশ নাজুক।
একদিকে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল, অন্যদিকে যে কয়টা আছে সেগুলোর বেশিরভাগই নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এসব কারণে প্রতিদিনই পথে নেমে বিপাকে পড়ছেন নগরবাসী। শৌচাগারগুলো নিতান্ত বিপদে না পড়লে মানুষ ব্যবহার করেন না। তাও শুধু পুরুষ পথচারীরা, এগুলো নারীদের জন্য মোটেও ব্যবহার ও পরিবেশ উপযোগী নয়।
প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেই গণশৌচাগারগুলোতে। আর ভবঘুরেদের কথা তো হিসেবেই নেই। ভ্রাম্যমাণ টয়লেটও খুব একটা চোখে পড়ে না।
এমতাবস্থায় সার্বিকভাবে মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হলে স্যানিটেশন কার্যক্রম জোরদার করে সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করেন, শপিংমল ও পাবলিক স্পেস তৈরির অনুমোদনের সময় পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলো পথচারী শাহ আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাস্তায় বের হবার পর যদি প্রকৃতির ডাক আসে তবে আপনাকে হন্যে হয়ে খুঁজতে হবে কোথায় গেলে নিস্তার মিলবে। যদিও বা পেয়ে যান তাহলে সেটির পরিবেশ দেখলে আপনার গা গুলিয়ে উঠবে।
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কথা হলো ইশতিয়াক ইসলাম নামের এক রোগীর স্বজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১২ জন রোগীর জন্য কেবলমাত্র ১টি টয়লেট ব্যবস্থা আছে। প্রতিদিন হাসপাতালের বহিঃর্বিভাগে আগত রোগী ও রোগীর স্বজনদের জন্য কোন পাবলিক টয়লেট নেই। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরুপ।
এপেক্স ক্লাব অব কুষ্টিয়ার প্রেসিডেন্ট কেএম জাহিদ পাবলিক টয়লেটে স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ নিশ্চিত এবং সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেট সুবিধা না থাকায় বিশেষ করে শিশুরা ডায়েরিয়া, কলেরাসহ অন্যান্য পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সঠিক স্যানিটেশন ব্যবস্থায় ভবিষ্যত প্রজন্মের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি শিশু মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।
স্যানিটেশন সুবিধা পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার উল্লেখ করে সাফের নির্বাহী পরিচালক মীর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মজমপুর বাসস্ট্যান্ড, জজকোর্ট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চত্বরসহ এনএস রোডের বিভিন্ন মার্কেটে পাবলিক টয়লেট নেই। এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজারো মানুষ আসা যাওয়া করলেও তাদের জন্য সঠিক টয়লেটের কোন ব্যবস্থা নেই।
কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলী বলেন, পৌরসভার কয়েকটি পাবলিক টয়লেট ছিলো। কিন্তু মার্কেট নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের কারণে সেগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। তবে সেগুলো আবার নতুনভাবে নির্মাণ করা হবে।