বিলভাতিয়ায় ভ্রাম্যমাণ পাতিহাঁস পালনে স্বাবলম্বী মাসুদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে সীমান্তবর্তী উপজেলা ভোলাহাট। প্রায় আড়াই লাখ মানুষের বসবাস। এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে আম ও ধান। তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রম কেউ কেউ। যেমন কয়েকজন শিক্ষিত যুবক উপার্জনের জন্য বেছে নিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ পাতিহাঁস পালন।
এদের মধ্যে একজন মাসুদ রানা। বিএ পাশ করার পরেই সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করেন। গড়ে তোলেন বিল ভাতিয়া বিলে ভ্রাম্যমাণ পাতিহাঁসের খামার।সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় খামারি মাসুদ রানার সঙ্গে।
তিনি জানান, বিল ভাতিয়ার বাগডোগ্রা, চকচোকা নিম্নাঞ্চল বছরে কয়েকমাস পানিতে তলিয়ে থাকে। এ সময় কোন ফসল না হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়ে হাজারো মানুষ। সাবলম্বী হওয়ার চেষ্টায় চলতি বছরে ৭০০ পাতিহাঁস দিয়ে খামার শুরু করেন। পরে আরও ২০০ হাঁস বাইরে থেকে কিনে খামারে আনেন। হাঁসগুলো থেকে প্রতিদিন ৫০০ ডিম পাওয়া যায়। ডিম বিক্রির টাকায় চলে অন্যান্য খরচ। তারপরও দিনে সব খরচ বাদ দিয়েও বাড়তি থাকে প্রায় আড়াই হাজার টাকা।
মাসুদ রানা আরও জানান, ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে পাতিহাঁস পালন করায় তার খামারে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে বেশ কয়েকজন বেকার শ্রমিকের। তারা খামার হতে যে টাকা বেতন পান তা দিয়েই সংসার চলে তাদের।
মো.শহিদুল ইসলাম নামে খামারের এক শ্রমিক জানান, কাজ কর্ম না থাকায় সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকত। মাসুদ রানার খামারে কাজ শুরুর পর এখন পরিবার পরিজন নিয়ে সুখেই আছেন তিনি।
মাসুদ রানার হাঁস পালনে উদ্বুদ্ধ হয়ে আরও প্রায় ১৭ জন যুবক গড়ে তোলেন একই পদ্ধতিতে হাঁসের খামার।
খামারিরা জানান, হাঁসের জন্য আলাদা খাবার কেনার প্রয়োজন হয় না। এ ছাড়া রোগবালাই কম হওয়ায় ঝুঁকি অনেকটাই কম। ফলে সুস্থ্যভাবে বড় হয় হাঁস।
স্থানীয়ভাবে এসব পাতিহাঁসের মাংসের চেয়ে ডিমের ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে বলে জানান খামারিরা।
অন্যদিকে একই গ্রামের ঝাটু শেখের ছেলে মনিরুল ইসলাম জানান, আমি ১০ বছর যাবত পাতিহাঁস পালন করে বেশ স্বাবলম্বী হয়েছি, হাঁস বিক্রির টাকা ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় খরচ করছি।
এদিকে হাঁস পালনে খামারিদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বলে জানান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।
তিনি আরও জানান, ভোলাহাট উপজেলায় পাতি হাঁসের খামার আছে প্রায় ২২টি। এর মধ্যে সবগুলোই খামারে ডিম উৎপাদন করা হয়।