জেলা পরিষদের ৭৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ, প্রধান সহকারী বরখাস্ত
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের বিভিন্ন খাতে আয় করা প্রায় ৭৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে এই তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা পরিষদকে নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ অধিশাখা। একই সাথে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের জমি লিজ, ঘাট ইজারা, ডাকবাংলোর ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতের মোট ৭৮ লাখ ৪ হাজার ১৩০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন রেজাউল করিম। তবে অভিযুক্ত রেজাউল করিম আত্মসাৎকৃত ৭৮ লাখ টাকা দফায় দফায় পরিশোধ করছেন বলেও জানা যায়। টাকা ফেরত দিতে থাকলেও আইন অনুযায়ী শাস্তি ভোগ করবেন তিনি।
এ সকল অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত ১৮ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ড. জুলিয়া মঈন এক অফিস আদেশে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে আত্মসাৎকৃত টাকা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ প্রদান করা হয় লিখিত আদেশে।
জেলা পরিষদের একাধিক সূত্র জানায়, ১৭ বছরের সরকারি চাকরি জীবনের পুরো সময়ই নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদে ছিলেন রেজাউল করিম। প্রভাবশালী চক্রের সঙ্গে তার সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলার সাহস করতেন না।
জানা যায়, কেবল সরকারি অর্থ আত্মসাতই সীমাবদ্ধ ছিলেন না রেজাউল করিম। চাকরিতে প্রবেশেও আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রতারণার। ২০০১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদে উচ্চমান সহকারী পদে যোগদান করেন চাঁদপুর জেলার মতলব থানার চরলক্ষীপুর গ্রামের আবু বকর সিদ্দীকের ছেলে রেজাউল করিম। যোগদানের ২৪ দিনের মাথায় বদলি হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদে যোগদান করেন।
চাকরির ১৭ বছর পর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে রেজাউল করিমের সার্টিফিকেট জমা না দিয়ে চাকরি নেওয়ার বিষয়টি। জাল সার্টিফিকেটে মুন্সিগঞ্জ জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী পদে যোগদান করা ও সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৭ সালের দুদকের এক মামলায় কারাগারেও গিয়েছিলেন তিনি।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ওমরাহ হজ পালনে দেশের বাইরে থাকায় তার সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুব্রত পাল জানান, তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র তৈরি করা হচ্ছে এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ইতোমধ্যে আত্মসাৎকৃত ৭৮ লাখ টাকা তিনি দফায় দফায় ফেরত দিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ২০ লাখ টাকার মতো ফেরত দিয়েছেন।