টিসিবি’র পেঁয়াজ কিনতে ইট-ব্যাগ-বোতলের লাইন!

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইট, ব্যাগ, খবরের কাগজ, পানির বোতল দিয়ে লাইন, ছবি: বার্তা24.কম

ইট, ব্যাগ, খবরের কাগজ, পানির বোতল দিয়ে লাইন, ছবি: বার্তা24.কম

শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টা, রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার বড় মসজিদের সামনে সারি করে রাখা হয়েছে ইট, ব্যাগ, মিষ্টির প্যাকেট, পানির বোতল ও খবরের কাগজ। পাশাপাশি দু’টি লাইনে এসব রাখা হয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পেঁয়াজের জন্য।

প্রতিদিন এই স্থানে টিসিবির ডিলার ট্রাকে করে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। সকাল ১০টায় ট্রাক আসার আগেই পেঁয়াজ কিনতে আসা মানুষ দাঁড়িয়ে যান লাইনে। কিন্তু শনিবার পেঁয়াজের ক্রেতারা নিজে লাইনে না দাঁড়িয়ে থেকে ইট, ব্যাগ, খবরের কাগজকে লাইনে রেখে দেন। এমন দীর্ঘ দুটি লাইন দেখে হাসাহাসি করেছেন অনেকে। কিন্তু যারা এ লাইন করেছিলেন তারা বলছেন, নিজেদের সুবিধার জন্যই এ ব্যবস্থা।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহীতে পেঁয়াজের বাজার এখনও অস্থিতিশীল। গত ২৪ নভেম্বর থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি চলছে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সেদিন থেকেই নগরীর পাঁচটি পয়েন্ট থেকে পেঁয়াজ কিনছেন ক্রেতারা। মানুষের এতো ভিড় নিয়ে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য থাকে পুলিশের পাহারাও।

শনিবার সকালে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে বড় মসজিদের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকেই ইট, খবরের কাগজ, মিষ্টির প্যাকেট ও পানির বোতল লাইন করে রেখে দেয়া হয়েছে। যারা রেখেছেন তাদের কেউ লাইনের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করছেন, কেউবা গিয়েছেন প্রয়োজনীয় কাজ সারতে। আবার কেউ গিয়েছেন সবজির বাজারে। তাদের আশা ছিলো, প্রয়োজনীয় কাজ সারতে সারতেই পেঁয়াজের ট্রাক চলে আসবে। কিন্তু নিরাশা হয়েই ফিরতে হয় তাদের। এদিন নগরীর কোথাও টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

নগরীর হড়গ্রাম বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনতে এসেছিলেন আব্দুল মালেক। তিনি একটি খবরের কাগজ লাইনে রেখে গিয়েছিলেন বাজার করতে। সকাল ৯টার দিকে এসে তিনি দেখছিলেন তার কাগজ ঠিক আছে কি না। তিনি বলেন, আমি এর আগে দুইবার এসে পেঁয়াজ নিয়ে গিয়েছি। আসলে অনেক বেশি ভিড় হয়। পায়ে ব্যথা ধরে যায়। তাই এই ব্যবস্থা করেছি।

মালেকের মতো একই কথা বলেন আবদুর রউফ। তিনি নগরীর বড়কুঠি এলাকা থেকে এসেছিলেন। রউফ বলেন, আমি লাইনে ইট রেখেছি। লাইনে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। তাই এই ব্যবস্থা করেছি।

লাইনে মিষ্টির প্যাকেট রেখে ঘোরাফেরা করছিলেন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, লাইনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাটা কষ্টকর। তাই সবাই এই ব্যবস্থা করেছেন। তাদের দেখাদেখি তিনিও করেন। তবে সকাল ১০টার পর তারা জানতে পারেন পেঁয়াজের ট্রাক আসবে না। তখন তাদের হতাশ হয়ে ফিরতে হয়।

টিসিবির আঞ্চলিক অফিস প্রধান প্রতাপ কুমার বলেন, মজুত না থাকার কারণে শনিবার নগরীর কোথাও পেঁয়াজ বিত্রিু হয়নি। তবে পেঁয়াজ চট্রাগ্রাম থেকে আনা হচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত একটি ট্রাক পুঠিয়া এসেছে। আরেকটি নাটোর পর্যন্ত এসেছে। রাজশাহীতে আসতে দেরি হবে। এগুলো ডিলারদের দেয়ার পর বিক্রয় পয়েন্টে যেতে অনেক দেরি হয়ে যেত। তাই আজ পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়নি। তবে রোববার থেকে পেঁয়াজ বিক্রি করা হবে বলে জানান তিনি।