শুঁটকি উৎপাদনেই জীবিকা চলে
বরগুনার তালতলী ও পাথরঘাটার বিভিন্ন চরে শুরু হয়েছে শুঁটকি তৈরির কাজ। শুঁটকি তৈরিতে এই এলাকার প্রায় ১৫ হাজার নারী পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে।উৎপাদিত শুঁটকি বিক্রি করে জীবিকা চলে এই এলাকার জেলেদের। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই বরগুনার উপকূলে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে শুঁটকি শ্রমিকরা। জেলে পল্লীগুলোতে বাড়তে শুরু করে শুঁটকি ব্যবসায়ী, মালিক ও শ্রমিকের আনাগোনা।
বরগুনার লালদিয়া, আশারচর, সোনাকাটা, জয়ালভাঙ্গা চরের, শুঁটকি পল্লীতে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত ৬ মাস ধরে চলে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ। এখানকার শুঁটকিতে কোনো প্রকার কীটনাশক বা অতিরিক্ত লবণ দেওয়া হয়না বলে এই এলাকার শুঁটকির চাহিদা একটু বেশিই থাকে। তবে সরকারী সহযোগিতা ও সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে আরও বেশি শুঁটকি উৎপাদন সম্ভব হবে বলে জানান জেলেরা।
বরগুনার আশারচর, শুঁটকি পল্লীতে গিয়ে দেখা যায়, শুঁটকি পল্লীতে ছোট ছোট ২৪টি ঘরে প্রায় ৫ শতাধিক জেলে শুঁটকি উৎপাদন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। একের পর এক মাছ ধরা ট্রলার সমুদ্র থেকে আসছে। সেখান থেকে শুঁটকি ব্যবসায়ীরা পোয়া, সোনাপাতা, মধুফাইস্যা, রূপচাঁদা, পোটকা, শাপলাপাতা, চাপিলা, ফাইস্যা, লইট্টা, চিংড়ি, ছুড়ি, ভোল, মেদ সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনছেন। কেউ কেউ ওইসব মাছ পরিষ্কার করছে। একদল শুঁটকি মাচায় করে রোদে শুকাচ্ছেন আবার কেউ শুটকি প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত রয়েছেন।
এ ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর শুঁটকি পল্লীগুলোতে ঘরের সংখ্যা বেড়েছে বলে জেলেরা জানিয়েছেন।
বর্তমানে প্রতি কেজি ছুরি শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, রূপচান্দা ৮০০ থেকে ১ হাজার, মাইট্যা ৫০০ থেকে এক হাজার, লইট্টা ৪০০ থেকে ৮০০, কোরাল ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০, পোপা ৪০০ থেকে ৮০০, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং অন্যান্য ছোট মাছ ২০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও এখানকার শুঁটকি পল্লির মাছের গুড়ি সারাদেশে পোল্ট্রি ফার্ম ও ফিস ফিডের জন্য সরবরাহ হয়ে থাকে।
শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন এখানকার শুঁটকি ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হচ্ছে। তদের দাবি এখান থেকে সরকারি ভাবে এসব শুঁটকি বিদেশে রফতানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক। কারণ দেশ থেকে সরকারিভাবে শুঁটকি রফতানির কোনো ব্যবস্থা নাই।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন শুঁটকি পল্লীর জেলেদের শুঁটকি উৎপাদনের বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সরকারী ভাবে শুঁটকি রফতানি করা যায় কিনা তার সুপারিশ মৎস্য অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে।