বেনাপোলে পাঁচ দিনে ৬ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বেনাপোলে খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পচনশীল পণ্য আমদানি বন্ধ, ছবি: বার্তা২৪.কম

বেনাপোলে খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পচনশীল পণ্য আমদানি বন্ধ, ছবি: বার্তা২৪.কম

ঘোষণার অতিরিক্ত পণ্য বহনের অভিযোগে বিজিবি কর্তৃক ৯ ট্রাক পানপাতা আটকের জের ধরে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত পাঁচ দিন ধরে খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পচনশীল পণ্য আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পাশাপাশি সরকারের প্রায় ৬ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। আমদানি বন্ধ থাকলে এসব পণ্যের বাজার মূল্য বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার প্রভাব পড়বে সাধারণ ক্রেতাদের ওপর।

আমদানিকারকরা হয়রানি মূলক আচরণের অভিযোগ এনে বলছেন, এই সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এই পথে কোনো কাঁচামাল আমদানি করা হবে না। তবে বিজিবি বলছেন, শুধুমাত্র অনিয়ম করে আমদানিকৃত মালামাল আটক করা হয়েছে। এতে অযথা কাউকে হয়রানি করা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল বন্দর দিয়ে অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টাক বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পচনশীল পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়ে থাকে। যা থেকে প্রতিদিন সরকারের প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকা রাজস্ব আসে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে এপথে প্রায় ১০ বছর ধরে কাঁচামালের আমদানি বন্ধ ছিল। কিছু দিন হচ্ছে এসব পণ্য আবার আমদানি শুরু হলেও বিজিবির হস্তক্ষেপে বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে এমন অভিযোগ এনে ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।

আমদানি বন্ধ থাকায় এক প্রকার বেকার হয়ে পড়েছেন বন্দর শ্রমিকরা

কাঁচামাল আমদানিকারক কামাল হোসেন ও উজ্বল বিশ্বাস জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াও পণ্যের চালান আটক করে হয়রানি করা হচ্ছে। এতে তারা লোকসানের শিকার হওয়ায় আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সিআ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আজিম উদ্দীন গাজী ও তৌহিদুল ইসলাম জানান, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি হয়ে থাকে। বেনাপোল বন্দরে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়ায় অনেক পণ্য পচে নষ্ট হয়। লোকসান এড়াতে ব্যবসায়ীরা কিছু বেশি পণ্য এনে থাকে। আমদানি বন্ধ থাকলে বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে তার প্রভাব পড়বে সাধারণ ক্রেতাদের ওপর। বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করে আমদানি সচল করা প্রয়োজন।

এদিকে কাঁচামাল আমদানি বন্ধ থাকায় কাজ কমে গেছে বন্দর শ্রমিকদের। এতে অর্থকষ্টে পড়েছেন শ্রমিকরা। তারা বলছেন, ৫ দিন ধরে আমদানি বন্ধ থাকায় এক প্রকার বেকার হয়ে পড়েছেন সবাই।

ফাঁকা পড়ে আছে বন্দর

বেনাপোল সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার রাকিবুল হাসান ও ও কাস্টমস হাউজের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, গত ৫ দিন ধরে এপথে আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতিদিন প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

৪৯ ব্যাটালিয়ন বিজিবির অধিনায়ক লে: কর্নেল সেলিম রেজা ফোনে জানান, সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধের পাশাপাশি শুল্কফাঁকি দিয়ে অনিয়ম করে কেউ আমদানি করলে তা বিজিবি দেখে। এসময় কাউকে কাউকে হয়রানি করে হয় না। এটা ব্যবসায়ীদের মনগড়া অভিযোগ।

উল্লেখ্য, গত ৩০ নভেম্বর থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পচনশীল পণ্যের আমদানি বন্ধ রয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে, মাছ, পানপাতা, আপেল, কমলা, মরিচ ও টমেটো ইত্যাদি।