স্কুলে গিয়ে জীবন বদলে গেল নুরানীর

  • মো.তারেক রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে নুরানী/ ছবি: বার্তা২৪.কম

স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে নুরানী/ ছবি: বার্তা২৪.কম

নুরানী আক্তার। বয়স এখন ৯ বছর। শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর এলাকার ব্যবসায়ী ওয়াসীম উদ্দীনের মেয়ে। তার ১৪ বছরের আরও একটি বোন রয়েছে। তবে সে বোনটি অন্যদের মত স্বাভাবিক।

নুরানী একজন প্রতিবন্ধী। সে চলাফেরা করতে পারে না অন্যদের মতো। কিন্তু তার বাবা মায়ের স্বপ্ন, অন্যদের মত করে গড়ে তুলতে চান মেয়েকে। সে চিন্তায় দুই বছর আগে ভর্তি করা হয় শিবগঞ্জ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে। স্কুলে ভর্তির পর বদলে যেতে থাকে তার জীবন। শ্রেণিশিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে নিজের ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়েছে নুরানী। 

বিজ্ঞাপন

মা মোসা. নাসরিন আক্তার জানান, জন্ম নেয়ার ৬ দিন পর নিউমোনিয়া ও খিঁচুনি হয় নুরানী আক্তারের। এরপর দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে অসুখ ভাল হলেও চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায় তার পা। দিন দিন হারিয়ে ফেলে বাকশক্তি। তাকে স্বাভাবিক জীবনে না ফেরাতে পেরে ভর্তি করানো হয় শিবগঞ্জ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে। ভর্তির সময় পরিবার এমনকি গ্রামবাসী কেউই ভাবতেও পারেনি নুরানী আক্তার বদলে যাবে। পরিবার ও শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বেড়েছে তার মেধাশক্তি। 

তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধী মেয়ে নুরানীকে প্রতিদিন প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূর হতে স্কুলে আনা নেয়া করতে হয়। এতে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়। তারপরও তিনি মেয়েকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে এক রকম লড়াই করে যাচ্ছেন। স্কুলে উপবৃত্তি ও পোশাক দেয়া হয়। কিন্তু সে টাকা দিয়ে চলা যায়না। তারপরও তিনি চালিয়ে যেতে যান মেয়ের পড়াশোনা।

বিজ্ঞাপন

তার শ্রেণিশিক্ষক মো. জজম আলী জানান, নুরানী আক্তার স্কুলে ভর্তির সময় অমনোযোগী ছিল। পর্যায়ক্রমে হাতে কলমে ও বিভিন্ন ছবি দেখে শিক্ষাজীবন শুরু হয় তার। বর্তমানে সে নিজেই অনেক কিছু পড়তে পারে, এমনকি লিখতেও পারে। বদলে গেছে চলাফেরার ধরন। সে এখন নিজ ইচ্ছেতেই পড়তে বসে, সবার সঙ্গে কথা বলে। এমনকি শিক্ষকদেরও বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারে।

শিবগঞ্জ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রবিউল হক জানান, তার বিদ্যালয়ে প্রায় আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা এখানে ভর্তি হওয়ার পরে অনেক বদলে গেছে। সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করলে প্রতিবন্ধী শিশুদের অনেকটা স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো সম্ভব।