হাসন রাজার ৯৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
হাওর-বাওর ও মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশের জেলা সুনামগঞ্জ হাসন রাজার দেশ হিসাবেই পরিচিত। শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) এই বিখ্যাত মরমী সাধক হাসন রাজার ৯৭তম মৃত্যুবার্ষিকী।
মরমী এই সাধকের জন্ম-মৃত্যুতে বরাবরই খুব একটা আয়োজন থাকে না সুনামগঞ্জে। পারিবারিকভাবেও কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়নি এ বছর। তাই অনেকটা নিরবেই কাটছে হাসন রাজার মৃত্যুবার্ষিকী। তার মৃত্যু বা জন্মতারিখ ঘিরে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় হাসন মেলার দাবি স্থানীয়দের।
অসংখ্য গানের জনক হাসন রাজা ১৮৫৪ সালের সালের ২১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের লক্ষণশ্রী’র ধনাঢ্য জমিদার পরিবারে জন্ম নেন। তিনি নিজেও ছিলেন জমিদার ।
হাসন রাজা মুখে মুখে গান রচনা করতেন। তার উল্লেখযোগ্য গান- 'লোকে বলে, বলেরে, ঘরবাড়ি বালা না আমার', ‘রঙের বাড়ই রঙের বাড়ই রে’, 'মাটির পিঞ্জিরার মাঝে বন্দি হইয়ারে', 'আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপরে', 'সোনা বন্ধে আমারে দেওয়ানা', 'কানাই তুমি খেইল খেলাও কেনে', 'একদিন তোর হইবে রে মরণ রে হাসন রাজা'।
জীবদ্দশায় তিনি প্রায় ২০০ গান রচনা করেছেন। তার গানে উচ্চারিত হয় সহজ সরল ভাষায় মানবতার চিরন্তন বাণী। সকল ধর্মের বিভেদ অতিক্রম করে তিনি গেয়েছেন মাটিও মানুষের গান।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ১৯২৫ সালে কলকাতায় এবং ১৯৩৩ সালে লন্ডনে হিবার্ট বক্তৃতায় হাসন রাজার দুটি গানের প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু প্রখ্যাত এই মরমী সাধকের জীবন-দর্শন ও গানের চর্চা এখন আর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হয় না বললেই চলে। প্রখ্যাত এ সাধক ১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।
বাউল শিল্পী বশির আহমদ বলেন, মরমী কবি হাছনরাজার মৃত্যুবার্ষিকীতে সুনামগঞ্জে উল্লেখ করার মত কোন অনুষ্ঠান হয় না। যদি হাছন রাজার মৃত্যু বার্ষিকীতে বড় করে কোন মিলন মেলা হত তাহলে আগামী প্রজন্মে তরুণরা হাছন রাজার সর্ম্পকে আরো জানতে পারত।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, মরমী কবি হাছন রাজার মৃত্যু বার্ষিকীতে কোন অনুষ্ঠান না থাকলে ২১ ডিসেম্বর তার জন্মবার্ষিকীতে জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর আয়োজনে দিনব্যাপী হাসন রাজার জীবন কর্ম এবং তার সৃষ্টির উপর প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।