পঙ্গুত্বের পথে অদম্য ছাত্র জিনারুল

  • মাজেদুল হক মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পঙ্গুত্বের পথে অদম্য ছাত্র জিনারুল

পঙ্গুত্বের পথে অদম্য ছাত্র জিনারুল

দোকান কর্মচারীর কাজ করে এমএ ভর্তি হওয়া জিনারুল ইসলামের (২৬) স্বপ্ন ম্লান হতে চলেছে। ভ্যান চালক পিতার পরিবারের অভাব অনটন লেখাপড়া আটকাতে পারেনি অদম্য জিনারুলের। এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘হিপ জয়েন্ট’ সমস্যা। কোমরের একপাশ অপারেশন হলেও অন্য পাশেরটি অকেজো। এখন অপারেশনের টাকা জোগাড় করতে না পেরে চোখের পানিতে ভাসছেন জিনারুল ও তার পরিবারের সদস্যরা। সময় গড়ানোর সাথে সাথে যেন পঙ্গুত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে জিনারুল।

জিনারুল ইসলাম মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শিমুলতলা গ্রামের ভ্যানচালক রমজান আলীর ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে ছোট। বড় ভাই স্যালো ইঞ্চিন চালিত যান (নছিমন) চালক। স্ত্রী সন্তান নিয়ে তার আলাদা সংসার। জিনারুল বাবা মায়ের সংসারে। চাষের জমিজমা না থাকায় শারীরিক পরিশ্রমই তাদের একমাত্র আয়ের উৎস। 

বিজ্ঞাপন

জিনারুলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে এসএসসিতে ভালো ফলাফল করে জিনারুল। ভর্তি হয় গাংনী সরকারী ডিগ্রি কলেজে। এ কলেজ থেকে এইচএসসি ও ডিগ্রি পাশ করে। ২০১৮ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে এমএ ভর্তি হয়। তবে লেখাপড়ার এ পর্যন্ত আসা তার পক্ষে মোটেই সহজ ছিল না। প্রতিটি পদক্ষেপে দরিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে এগিয়ে যাচ্ছিল স্বপ্নচারী মিনারুল। চাকরি করে পিতামাতার কষ্ট ঘোচানো ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোই ছিল তার মূল্য লক্ষ্য। স্বপ্ন পুরণে গাংনী উপজেলা শহরের জুঁই কসমেটিকস দোকানে কর্মচারীর কাজ নেয়। পাশাপাশি সকাল সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে সেলাই মেশিনের কাজ করে চলছিল তাদের সংসার ও লেখাপড়া।

জিনারুল ইসলাম বলেন, গেল কয়েক বছর ধরে তার কোমরে ব্যথা শুরু হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েক মাস আগে আমার কোমরের বাম পাশের হিপ জয়েন্ট অপারেশন হয়। কিছুদিন ভালো থাকলেও এখন ডান পাশ অপারেশন করতে হবে। এতে যে অর্থ লাগবে তা আমার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়।

বিজ্ঞাপন

জিনারুল ইসলামের পিতা বলেন, কাছের মানুষদের সহায়তা ও ঋণ করে ছেলের অপারেশন করায়। আমার এমন কোন সম্পদ নেই যা বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করাব।

গাংনী শহরের জুঁই কসমেটিক্স সত্বাধিকারী কামরুল ইসলাম বলেন, জিনারুলের মতো এতো বিশ্বস্ত ও সৎ কর্মচারী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আগের অপারেশনে আমি সাধ্যমতো খরচ করেছি। তবে এবার আমার পক্ষে অপারেশনের খরচ জোগানো সম্ভব হচ্ছে না। 

দেশে এমন হাজারো জিনারুলের চিকিৎসা হয় সহৃদয়বান বিত্তবানদের আর্থিক সহায়তায়। তাই জিনারুলের পাশে সহায়তার হাত বাড়াতে সকলের প্রতি আহবান জানালেন তার শিক্ষক রাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী প্রধান শিক্ষক সাহিবুল ইসলাম। জিনারুলের সাথে যোগাযোগ ০১৭৬৫-১৪৭২২৫।