শহীদ সুধীরের সমাধির পাশে ময়লার ভাগাড়

  • রাকিবুল ইসলাম রাকিব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শহীদ সুধীর বড়ুয়ার সমাধিস্থলের পেছনের অংশ। ছবি: বার্তা২৪.কম

শহীদ সুধীর বড়ুয়ার সমাধিস্থলের পেছনের অংশ। ছবি: বার্তা২৪.কম

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে মাঠের পাশে শহীদ সুধীর বড়ুয়ার সমাধিস্থল (স্মৃতিসৌধ) অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। সমাধির সীমানা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ দোকান-পাট ও অবৈধ স্থাপনা। স্থানীয়রা সমাধির আশপাশে মলমূত্র ত্যাগ ও ময়লা-আবর্জনা ফেলায় স্থানটি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, শহীদ সুধীর বড়ুয়ার বাড়ি চট্টগ্রামে। তিনি তৎকালীন ইপিআরে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে নেত্রকোনা থেকে পাকবাহিনী ট্রেনযোগে পালিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় শ্যামগঞ্জে পাকবাহিনীর ব্রাশফায়ারে শহীদ হন সুধীর বড়ুয়া। পরে শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে মাঠের উত্তরপাশে তাকে সমাহিত করা হয়। স্বাধীনতার পর শহীদ সুধীর বড়ুয়ার স্মৃতি রক্ষায় তাকে যেখানে সমাহিত করা হয়েছিল সেই জায়গায় স্মৃতিসৌধ গড়ে তোলা হয়।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মইলাকান্দা ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ রেলওয়ে মাঠের উত্তর পাশে লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে শহীদ সুধীর বড়ুয়ার স্মৃতিসৌধটি অবস্থিত। প্রয়োজনীয় সংস্কার রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অরক্ষিত স্মৃতিসৌধের পাশে আগাছা জন্মেছে। স্মৃতিসৌধের সীমানা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট ও অবৈধ স্থাপনা। মানুষ যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করছে। স্মৃতিসৌধের পাশে একটি ডোবায় স্থানীয়দের ফেলা ময়লা-আবর্জনা জমে স্থানটি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

শহীদ সুধীর বড়ুয়ার সমাধিস্থল। ছবি: বার্তা২৪.কম

ময়মনসিংহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কার্যকরী সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম মুহাম্মদ আজাদ জানান, সুধীর বড়ুয়া মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হয়েছেন। একজন বীর শহীদের সমাধিস্থলের পাশে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় থাকবে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে এই শহীদের সমাধিস্থল রক্ষা করা হোক সরকারের কাছে এটাই দাবি তার।

বিজ্ঞাপন

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের দাবি- সুধীর বড়ুয়ার সমাধিস্থলের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সামীনা প্রাচীর নির্মাণের পাশাপাশি আশপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জায়গাটির সৌন্দর্য বর্ধন করা হোক। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে এই শহীদের বীরত্বের ইতিহাস পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে স্মৃতিসৌধের পাশে নামফলক করে প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেজুতি ধর জানান, শহীদ সুধীর বড়ুয়ার স্মৃতিসৌধ রক্ষায় খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।