শিশু হৃদয়ে জেগেছে দেশপ্রেমের ছোঁয়া

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিজয় দিবসে নাটোরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো মুখরিত ছিলো বিভিন্ন বয়সী মানুষের পদচারণায়, ছবি: বার্তা২৪.কম

বিজয় দিবসে নাটোরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো মুখরিত ছিলো বিভিন্ন বয়সী মানুষের পদচারণায়, ছবি: বার্তা২৪.কম

মহান বিজয় দিবস নাটোর শহরের শিশুদের জন্য বয়ে এনেছিলো ঈদের আনন্দ। ঈদের দিনের মতো এদিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনন্দে ঘুরে বেড়িয়েছে কোমলমতি শিশুরা। অভিভাবকরাও ছোটদের আনন্দ করার সুযোগ দিয়েছেন। তারা মনে করছেন, খুশির আনন্দে ধীরে ধীরে বিজয়ের মাহাত্ম্য ও দেশপ্রেমবোধ শিশু-কিশোরদের কোমল হৃদয়ে ঠাঁই করে নেবে এভাবে।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দিনভর ছোট্টশহর নাটোরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো মুখরিত ছিলো বিভিন্ন বয়সী মানুষের পদচারণায়। আর বিকেলে শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যকার প্রীতি ফুটবল খেলা উপভোগ ছিলো বাড়তি পাওনা। ফুটবল ম্যাচটি দর্শকদের বেশ আনন্দ দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিকেলে নাটোর শিশুপার্কে বাবার-মার সঙ্গে বেড়াতে আসে ছোট্ট অনন। গালে লাল-সবুজের পতাকা আঁকা। অননের বাবা সিদ্দিকুর রহমান জানান, তিনি সন্তানকে বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস একটু একটু করে জানাতে চান আনন্দের স্পর্শে। জাতীয় দিবসের আবহ ও পারিপার্শ্বিকতা শিশুকে দেশ নিয়ে ধীরে ধীরে আগ্রহী করে তুলছে।

অতুল সরকার নামের এক অভিভাবক জানান, সুখ-দুঃখে আমরা বাঙালিরা একসঙ্গে বাঁচি, আর উৎসবকে সার্বজনীনতায় রূপ দিতে পারি। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই চর্চা দেখে বেড়ে উঠুক। শিশুদের চার দেয়ালে বন্দী না রেখে তাকে মাটির গন্ধ-স্পর্শ নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

শিশু সৌরভের মা শাসমুন্নাহার বলেন, জাতীয় দিবসগুলো শিশুদের মনে প্রভাব ফেলে। তারা জাতীয় পতাকা, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে চায়। এসব ব্যাপারে শিশুর প্রথম জানাই স্মৃতিতে স্থায়ী হয়। তাই বইয়ে পড়ে বা গল্পের অপেক্ষায় না থেকে সন্তানকে বাইরে আনা দরকার।

জাতীয় দিবসগুলোর বিভিন্ন আয়োজন শিশুদের হৃদয়ে দেশপ্রেমের অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করেন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা নবীউর রহমান।

তিনি বলেন, পরপর কয়েকটি প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত করা বা অসত্য ইতিহাস জানানো হয়েছে। এখন সুযোগ এসেছে একটি প্রজন্মকে ধীরে ধীরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বড় করার।

মনোবিজ্ঞানের প্রভাষক গোলাম কিবরিয়া বলেন, জাতীয় দিবসগুলোতে শিশুদের খেলাচ্ছলে অংশ নেওয়া একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত। শিশুমন চার দেয়াল, ইন্টারনেট বা খেলনার প্রতি আসক্ত হওয়ার চেয়ে আমাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নিয়ে আগ্রহী হওয়া উত্তম। শৈশব থেকে এ চর্চা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ বা নেতিবাচক কিছুতে তারা প্রভাবিত না হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে মনেপ্রাণে ধারণ করবে।