কনকনে শীতেও খালি গায়ে কাজ করছেন পাথর শ্রমিকরা
দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। হিমালয়ের পাদদেশে হওয়ায় এ জেলায় শীতের তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। চারদিকে ঘন কুয়াশার সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ ও হিমেল হাওয়ায় জবুথবু অবস্থা এখানকার মানুষদের। জীবিকার তাগিদে হাড় কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ছেন খেটে খাওয়া মানুষরা। শীতকে ভুলে গিয়ে কেউ নদীর পানিতে ডুবে, আবার কেউবা খালি গায়ে কাজ করছেন।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হলেও ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে সকাল ৯টায় তাপমাত্রা নেমে আসে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রিতে। আর এটিই এখন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
সকালে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর দেবনগড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কনকনে শীতে খালি গায়ে ট্রাকে পাথর লোড করছেন বেশ কয়েকজন পাথর শ্রমিক।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, গরম কাপড় পরে ট্রাক লোডের কাজ করলে শরীর ভারী হয়ে যায়। তাই জীবিকার তাগিদে কনকনে শীতে খালি গায়ে কাজ করছেন তারা। শুধু শীত নয় ঝড় বৃষ্টিতেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয় তাদের।
আরও পড়ুন: বেলা বাড়ার সঙ্গে কমলো পঞ্চগড়ের তাপমাত্রা
এ বিষয়ে পাথর শ্রমিক রতিন দাস বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমরা গরীব, তাই কনকনে শীতেও খালি গায়ে কাজ করতে হচ্ছে। এই কাজের উপর নির্ভর করছে পরিবার। তাই শীতে ভয় না পেয়ে কাজ করতে হচ্ছে।’
একই কথা জানালেন আরেক শ্রমিক জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘শীতে ঠান্ডা লাগানোর পর জ্বর, সর্দি, কাশিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। কিন্তু কী করব? কাজ না করলে তো ভাত জুটবে না।’
জানা যায়, পাথররে জন্য বিখ্যাত পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। তেঁতুলিয়া উপজেলার সমতল ভূমি, নদী ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটান থেকে প্রচুর পরিমাণে পাথর আমদানি করা হয়। এসব পাথর ভেঙে বিভিন্ন আকৃতি ও সাইজ করা হয় বিক্রির জন্য। এরপর পাথরগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাকযোগে সরবরাহ করা হয়।
পঞ্চগড় পাথর বালি ও শ্রমিক কল্যাণ সমিতির দফতর সম্পাদক আব্দুর রউফ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘সারা বছর কমবেশি পাথরের ব্যবসা চলে আমাদের। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাক লোড হয়ে পঞ্চগড়ের পাথর বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। আর এসব ট্রাকে পাথর লোড করে শ্রমিকরা।’
পঞ্চগড় মোটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন (২৬৪) সভাপতি মোশাররফ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘শ্রমিকরা শুধু শীত নয় ঝড় বৃষ্টিতেও কাজ করে। শীতকালে খালি গায়ে কাজ করলেও তেমন কোনো সমস্যা হয় না। কারণ, তাদের অভ্যাস হয়ে গেছে।’