তীব্র শীতে অতিকষ্টে ভূমিহীনরা
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম মশান। গ্রামের একপাশ দিয়ে বিশাল মাঠ এবং ক্যানেল চলে গেছে। ক্যানেলের দুইধার দিয়ে দেড়শটি পরিবারের প্রায় ৪-৫শ মানুষের বসবাস। এই ক্যানেল পাড়ের অধিকাংশই দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে। তারা সবাই ভূমিহীন। নিজস্ব কোনো জায়গা জমি না থাকায় ক্যানেলের পাড় সমান করে কোনরকমে বসবাসের উপযোগী করে জীবনযাপন করছে। চাষের নিজস্ব জমি না থাকায় রিক্সা-ভ্যান চালিয়ে, মাঠে কাজ করে, আবার হকারি সংসার চালাচ্ছেন।
শীতের তীব্রতায় ভূমিহীন এসব মানুষদের কষ্ট যেন আরো দ্বিগুণ হয়ে আছে। একদিকে শৈত্যপ্রবাহ, আরেকদিকে শীতবস্ত্রের স্বল্পতা। দুই মিলিয়ে কষ্ট করেই চলতে হচ্ছে এদের। অনেকে আবার খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
এখানকার বাসিন্দা ফজু হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'এই ঠান্ডায় একটুও আরাম পাচ্ছিনা। ঘরের ভিতরেও কনকনে ঠাণ্ডা আবার বাইরেও বাতাস। আমারে কেউ কম্বলও দেয় না।'
ষাটোর্ধ্ব নবীরন নেছা নামের এক বৃদ্ধা বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'মাটির ঘরে আমি একা বসবাস করি। এই শীতের সময় একটা পুরাতন জরাজীর্ণ লেপ গায়ে দিয়ে থাকতে হয়। তাও ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পড়ি।'
বিধবা কুটিলা খাতুন বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'আমার স্বামী মারা গেছে কয়েক বছর আগে। ক্যানেলের ধারে একটা খুপড়ি ঘরের ভেতরে আমাকে থাকতে হয়। এখন খুব ঠান্ডা পড়ছে। কেউ কম্বল দেয়না। চেয়ারম্যান, মেম্বারের কাছে গিয়েও কোনো লাভ হয় নি। একটা যদি কম্বল পেতাম এই শীতে খুব উপকার হত।'
বারুইপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, সরকারিভাবে যে পরিমাণ কম্বল আমরা বরাদ্দ পেয়ে থাকি প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, শহরে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ প্রশাসন শীতবস্ত্র বিতরণের আয়োজন করে থাকে। কিন্তু গ্রামপর্যায়ে একেবারেই শীতবস্ত্র বিতরণ না থাকায় এবং বিত্তশালীরা এগিয়ে না আসায় অসহায় শীতার্ত মানুষগুলো দুঃখ কষ্ট নিয়েই থাকতে হয়। তাই গ্রাম পর্যায়ে বিত্তশালীদের শীতবস্ত্র বিতরণ এর জন্য এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।