শীত আর ঘন কুয়াশায় থমকে গেছে মাদারীপুর
কয়েকদিনের শীত আর ঠাণ্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে পদ্মা নদীর তীরবর্তী জেলা মাদারীপুরের জনজীবন। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা এবং হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জীবনমান। এছাড়া মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকছে মাদারীপুর। কুয়াশার চাদরে চারদিক ঢাকা থাকায় থমকে আছে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জীবিকা। এছাড়াও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকাবাসী।
এদিকে, জেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলের নিম্নআয়ের মানুষ, ছিন্নমূল, দুঃস্থ অসহায় লোকজনের দুর্ভোগ বেড়েছে ঠাণ্ডায়। প্রচণ্ড শীতের মধ্যে রাতে বৃষ্টি হওয়ায় শীত আরও জেঁকে বসেছে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত হয়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
এদিকে, গত দুই দিনেও জেলার কোনো এলাকায় সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি।
ঠাণ্ডা আর ঘন কুয়াশার কারণে জেলার শিবচর উপজেলার পদ্মানদী বেষ্টিত চরজানাজাত, কাঠালবাড়ি, বন্দরখোলা ও সন্নাসীরচর, মাদবরেরচর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষজন কাজের সন্ধানে বাইরে যেতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকে ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে গেলেও কাজ মিলছে না বলে জানান। ফলে আয়ও কমে গেছে তাদের। এছাড়া কৃষকেরা ক্ষেতে যেতে পারছেন না কাজ করতে।
অন্যদিকে দুই একজন মাঠে কাজ করতে গেলেও ঠাণ্ডার কারণে বেশিক্ষণ সেখানে থাকতে পারেননি তারা।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে কথা হয় শিবচর উপজেলার চরজানাজাত এলাকার মো. জালাল উদ্দিন সরকারের সাথে। তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া গত তিন দিন ধরে তিনি ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
একই উপজেলার নিলখী এলাকার কৃষক মমিন মাদবর জানান, ঠাণ্ডা আর কুয়াশারা কারণে ক্ষেতে গিয়েও কাজ না করে ফিরে আসি। ঠাণ্ডা আর কুয়াশায় আমরা নিরুপায়। আয় না থাকায় অন্যের কাছ ধার নিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে। এরকম যদি কয়েকদিন চলতে থাকে তাহলে তাদের অনাহারে থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।
রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর বাজারের ব্যবসায়ী মৃদৃল পাল জানান, ঠাণ্ডার কারণে বেচাবিক্রি বন্ধ। দোকান খুললেও শীতের কারণে ক্রেতা নেই তেমন বাজারে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে জানান, এ পর্যন্ত জেলার চারটি উপজেলায় দুঃস্থ মানুষের মাঝে সরকারিভাবে সাড়ে ২৩ হাজার হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আরো ৫০ হাজার কম্বলের চাহিদা দিয়েছি। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জেলার বিভিন্ন স্থানে কম্বল বিতরণ চলছে।