কক্সবাজারে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে রেকর্ড
কক্সবাজার জেলায় ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণ ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৫২৮ পিস ইয়াবা, ২৪.৩২৯ লিটার দেশি মদ, ২৭৩ বোতল বিদেশি মদ, ৮৫৫ বোতল হুইসকি, ১৩৯৮ বোতল বিয়ার, ৪৮৪ বোতল ফেনসিডিল, ৯০.৯০০ কেজি ১৬২ পুরিয়া গাঁজা ও ১৩.৬৫০ কেজি সিসা উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এসব উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে ২ হাজার ২৬০টি এবং আসামি ৩ হাজার ২০৩ জন। এছাড়াও ৬৯৭ ধরনের অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৩৭৯টি, আসামি ৭৩৩ জন। যা অন্যান্য বছরের চেয়ে রেকর্ড বলে ধারণা কর্মকর্তাদের।
এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রায় দুই শতাধিক ইয়াবা কারবারি, ডাকাত ও সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। যার মধ্যে দুইজন নারীসহ ৫৫ জন রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছর জুড়ে ২৬ লাখ ২৭ হাজার ১৪৬ পিস ইয়াবা, ৭৩৩৬.৫০০ লিটার দেশি মদ, ১৪৭ বোতল বিদেশি মদ, ৫৫ ক্যান বিয়ার, ১৩ পুরিয়া হেরোইন, ৩৯.৮৯০ কেজি ১৩৭ পুরিয়া গাঁজা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৬১৭টি, আসামি ২৩২৩ জন।
অপরদিকে র্যাব অভিযান চালিয়ে ৪৩ লাখ ১০ হাজার ১৩৩ পিস ইয়াবা, ৫ হাজার ৮৬৬ লিটার দেশি মদ, ৭৯ বোতল বিদেশি মদ, ২৫৮ ক্যান বিয়ার, ৩০৫ বোতল ফেনসিডিল, ২৭.২০০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ২১৭টি, আসামি ৩৪৭ জন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ৭১ হাজার ৪৬ পিস ইয়াবা, ১১.১০১ লিটার দেশীয় মদ, ৩ বোতল বিদেশি মদ, ৩৪ বোতল ফেনসিডিল, ১৪.৯৫০ কেজি ২৫ পুরিয়া গাঁজা, ১৩.৬৫০ কেজি সিসা উদ্ধার করেছে। এসব ঘটনায় ২০৪টি মামলা হয়েছে, আসামি ২৬০ জন।
বিজিবি অভিযান চালিয়ে ২৪ লাখ ২০ হাজার ৫৬৭ পিস ইয়াবা, ২২ বোতল বিয়ার, ১৪৫ বোতল ফেনসিডিল, ১.০১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ১৯৩টি, আসামি ২০৭ জন।
কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে ১৩ লাখ ৮ হাজার ৭৪৪ পিস ইয়াবা, ২৬ লিটার দেশীয় মদ, ৪৪ বোতল বিদেশি মদ, ৮৫৫ বোতল হুইসকি, ১০৬৩ বোতল বিয়ার, ৭.৮৫০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে। এসব উদ্ধারে মামলা হয়েছে ২১টি, আসামি ৫৭ জন।
জানা গেছে, এক হাজতির কাছ থেকে ২ হাজার ৮৩৯ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে ৮টি, আসামি ৯ জন।
এদিকে ৪৪১টি এলজি, ১৯৬টি বন্দুক, ১টি দেশি পিস্তল, ৪টি বিদেশি পিস্তল, ১৩টি রাইফেল, ১টি ওয়ান শ্যুটারগান, ৭৭ রাউন্ড গুলি, ৩টি গুলির খোসা, ১৪৪৪টি কার্তুজ, ৬৯৫টি কার্তুজের খোসা, ৫টি ম্যাগজিন, ৬৯৭টি অন্যান্য অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ৩১৯টি, আসামি ৬৭৬ জন।
এছাড়া ৩০টি এলজি, ৩০টি বন্দুক, ৯টি বিদেশি পিস্তল, ১৬টি ওয়ান শ্যুটারগান, ২টি রিভলবার, ২টি এয়ারগান, ৫টি শ্যুটারগান, ৩২ রাউন্ড গুলি, ২৯৪টি কার্তুজ, ১০৭টি কার্তুজের খোসা উদ্ধার করেছে অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ৬০টি, আসামি ৫৭ জন।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসেন জানান, মাদক নির্মূলের জন্য পুলিশ সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। ইয়াবা, অস্ত্রসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ জানান, সীমান্ত এলাকা দিয়ে ইয়াবা ও অস্ত্র চোরাচালান রোধে কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি। আগামীতেও তা অব্যাহত রাখা হবে।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘মহেশখালী ও টেকনাফে ইয়াবা, অস্ত্র উদ্ধার ও দমনের চেষ্টা চলছে। কিছু অভিযানে ভালো সফলতাও এসেছে। আগামী দিনগুলোতে আমরা আরও অভিযান বৃদ্ধি করব।’