জুতা পায়ে শহীদ মিনারে, মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪কম, চুয়াডাঙ্গা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জুতা পায়ে শহিদ মিনারে, ছবি: সংগৃহীত

জুতা পায়ে শহিদ মিনারে, ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গিরিশনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয় শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে। সে সময় স্কুল প্রাঙ্গণের নির্মিত শহীদ মিনারে জুতা পায়ে নিয়ে ওঠেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ও অন্যান্য শিক্ষকরা। এঘটনা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুধিজন ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

গত সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) স্কুলটিতে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষনার সময় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় কেউ একজন জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে ওঠার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করলে মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পরে। বিষটি নিয়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক সাবেক সুবেদার মেজর সাইদুর রহমান ও সাধারণ মানুষ এ ঘটনায় অবিলম্বে জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে ওঠা সকলকে শাস্তির মুখোমুখি আনার দাবি জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, ২০০৪ তিতুদহ ইউনিয়নের গিরিশনগর গ্রামের একদল শিক্ষিত বেকারদের উদ্যোগে ৭৫ শতক জমিতে টিনের শেড দিয়ে ৫টি শ্রেণিকক্ষ নিয়ে গিরিশনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর স্কুলটি ২০১০ অষ্টম শ্রেণি জুনিয়র এবং ২০১৯ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর নবম ও দশম শ্রেণিতে এমপিওভুক্ত হয়। একই বছরে স্কুলটির অবকাঠামো উন্নয়নে তিনটি শ্রেণিকক্ষ বিশিষ্ট চারতলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বর্তমানে স্কুলটি প্রায় ৬শ শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য ১২ জন শিক্ষক রয়েছেন। বিগত দিনগুলোতে নানাপ্রকার টানাপোড়ন থাকলেও সম্প্রতি অবকাঠামো উন্নয়নসহ শিক্ষার পরিবেশ ফিরে এসেছে।

এব্যাপারে অভিযুক্ত স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হায়দার মল্লিক বলেন, 'দেশে অনেক জায়গায় অনেক কিছু ঘটে যাচ্ছে সেগুলো সাংবাদিকরা দেখেন না। শহীদ বেদীতে আমার পায়ে জুতা ছিলনা। কতিপয় ব্যক্তিরা আমার পায়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জুতা বসিয়ে দিয়েছে।' 

বিজ্ঞাপন

এদিকে জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে ওঠার ঘটনা স্বীকার করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ জানান, 'এ ঘটনায় শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত। জাতির কাছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।'

বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণায় শহীদ বেদীতে জুতা পায়ে আরো উঠেছিলেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক খাইরুল ইসলাম, ধর্মীয় শিক্ষক অমিনুল ইসলাম, ক্রিয়া শিক্ষক শাহ্ আলম ও বিঞ্জান শিক্ষক জিয়াউর রহমান।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে ওঠার ঘটনা যদি প্রমাণ মিলে তবে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।