ঠাকুরগাঁওয়ে শৈত্যপ্রবাহে বিপাকে বোরো চাষিরা
সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শীত, এরপর দুপুরে রোদ আবার মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। এমন কারণে দুপুরের কড়া রোদে ঝলসে যাচ্ছে বোরো ধানের চারা। আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগে। দিন দিন হলুদ বর্ণ ধারণ করে শুকিয়ে মরে যাচ্ছে বোরো ধানের চারা। টানা দুই সপ্তাহের এমন শৈত্য প্রবাহের কারণে বিপাকে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ে বোরো চাষিরা।
ঠাকুরগাঁওসহ ৫টি উপজেলায় গত ২ সপ্তাহ ধরে চলছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। চলমান শৈত্য প্রবাহের কারণে বোরো চাষের বীজতলা 'কোল্ড ইনজুরি'তে আক্রান্ত হচ্ছে। অনেক বীজতলার বোরো চারা পোড়া বা ঝলসানো রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। তাই চাষিরা তাদের বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। অনেকে বোরো বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়েও কিংবা কীটনাশক স্প্রে করেও তেমন কোনো ফল পাচ্ছেন না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ৬৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমি। এর আগে গত বছর জেলায় ৬০ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১২ হাজার ৯৪ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী)জাতের ৪৮ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি। এছাড়া গত বছর ৪ হাজার ৭৯২ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা করেছিল চাষিরা।
সদর উপজেলার বোরো চাষি মশিউর রহমান বলেন, ১০ শতক জমিতে বীজতলা লাগিয়েছি। গত কয়েকদিনের টানা শীতের কারণে চারাগুলো বিবর্ণ হয়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম। বিভিন্ন জনের নানা পরামর্শ অনুযায়ী স্প্রে করেও কোনো লাভ হচ্ছে না।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিনমারী এলাকার বোরো চাষি ওয়াহেদুজ্জামান জানান, দুবছর ধরে ধানের দাম নেই। খাওয়ার জন্য বোরো চাষ করবো অল্প জমিতে। কিন্তু টানা শৈত্য প্রবাহের কারণে বীজতলা নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি। আবহাওয়া ভালো না হলে এ বছর সঠিক সময় বোরো চাষ করা সম্ভব হবে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব উদ্দীন, শীতের সময় এমন সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সঠিক পরিমাণের ইউরিয়া সার দেওয়া হলে এ সমস্যা কেটে যাবে। তাছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা এবং উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা চাষিদের এ সমস্যা নিরসনের জন্য বিভিন্নভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। আমরা আশা করছি চাষিরা সময়মত বোরো চাষ এবং জেলায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো।