শৈত্যপ্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত বীজতলা, উদাসীন কৃষি কর্মকর্তারা

  • অনিক চক্রবর্তী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ক্ষতিগ্রস্ত বীজতলা/ছবি: বার্তা২৪.কম

ক্ষতিগ্রস্ত বীজতলা/ছবি: বার্তা২৪.কম

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা। 'কোল্ডইনজুরি' নামক রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ধানের চারা হলুদ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক স্প্রে ব্যবহার করেও চারা গাছের রোগ দমন করা যাচ্ছে না।

কৃষকদের অভিযোগ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে তো দূরের কথা অফিসেও ঠিকমত পাওয়া যায় না। যার কারণে বোরো ধানের বীজতলার রোগ দমনের পরামর্শও পাচ্ছেন না কৃষক। কৃষি কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণেই ধানের চারা নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে বলছে দাবি করছেন সাধারণ কৃষক। প্রান্তিক কৃষকরা বলছেন বীজতলা নষ্ট হওয়ার ফলে বোরো আবাদ নাবি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন
চারা লাগানোর ১৫ দিনের মাথায় শুকিয়ে যাচ্ছে

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় গত বছর প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ছিল। চলতি বছরেও বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৪ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে। এ বছরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় কৃষকদের বীজতলা রয়েছে ১ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে।

সদর উপজেলা সরোজগঞ্জের কৃষক আলতাব মিয়া জানান, এবছর দুই বিঘা জমিতে তিনি বরো ধানের চারা লাগিয়েছেন। চারা লাগানোর ১৫ দিনের মাথায় বীজতলা চারা গাছ হলুদ হয়ে যাচ্ছে। মাঠ কর্মী কৃষি অফিসারকে একাধিকবার ফোন করলে তিনি মাঠে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েও আসেননি।

বিজ্ঞাপন
এই রোগের প্রতিকারও জানেন না কৃষক

আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ এলাকার কৃষক রবিউল আলম জানান, জমিতে বোরো ধানের বীজতলায় হলদে ভাব দেখার সাথে সাথে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে গিয়ে বসে থাকলে অফিসারকে না পেয়ে ফিরে আসি। অনেক সময় মাঠ পর্যায়ে ব্লক কৃষি কর্মকর্তাকে ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেন না।

একই এলাকার কৃষক পরণ শেখ বলেন, বোরো বীজতলা নষ্ট হওয়ায় এবছর বোরো আবাদ নাবি হয়ে যাবে ফলে জমিতে বোরো পরবর্তী ফসল উৎপাদনে সমস্যা হবে।

কোল্ডইনজুরি রোগে আক্রান্ত বীজতলা

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, বীজতলায় চারা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত সহ্য করা ক্ষমতা রাখে। চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকায় কোল্ডইনজুরি রোগে আক্রান্ত হয়ে চাষিদের বোরো বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। বীজতলা সংরক্ষণে মাটির নিচ থেকে তোলা পানি চারা গাছে ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া চারা হলুদ হয়ে গেলে জিমসাম সার ব্যবহার করতে কৃষকদের পরামর্শ দেন তিনি। তবে কৃষি অফিসারদের মাঠে না যাওয়ার ব্যাপারে তিনি লোকবল সংকটের কারণে অনেক সময় সমস্যা হয় বলে জানান।