খেজুর গুড়ের দাম বেড়েছে
চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জের খেজুর গুড়ের হাট তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। গ্রামে দিনের পর দিন খেজুর গাছ কেটে ফেলায় রস আরোহণ কমে গেছে। গাছ সংকটের কারণে চাষিরা খেজুরের গুড় তৈরি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এ কারণে গত কয়েক বছরের তুলনায় এই বছর খেজুর গুড়ের দাম বেড়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জের খেজুর গুড়ের হাটটি বেশ নামকরা। শীতের তিন মাস এ হাটটি বেশ জমজমাট থাকে। দেশের বিভিন্ন জেলা যেমন ঢাকার সাভার, বরিশাল, কুমিল্লা, রাজশাহীসহ বেশ কয়েক জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই হাটে এসে খেজুর গুড় কিনে নিয়ে যায়। প্রতি সপ্তাহে দুইদিন সরোজগঞ্জে খেজুর গুড়ের হাট বসে। এ বছর খেজুর গুড় ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর ছিল ৭০ টাকা।
গাছি মফিজুল মণ্ডল জানান, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করা খুব কষ্টের কাজ। এ জন্য অনেকে এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে খেজুর গাছ ইটভাটায় পোড়ানোর কারণে গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। ফলে গাছিরা রসের অভাবে গুড় তৈরি করতে পারছে না। এ কারণে খেজুর গুড়ের দাম বেড়েছে।
অপর এক কৃষক রতন কুমার জানান, সরোজগঞ্জে সপ্তাহে দুইদিন গুড়ের হাট বসে। আগে প্রতি হাটে ৩০ থেকে ৫০টি ট্রাকে খেজুর গুড় লোড হলেও এখন তা কমতে কমতে ১৫ ট্রাকে এসে দাঁড়িয়েছে। খেজুর গাছ সংকটের কারণে এমন হয়েছে।
ওই হাটে খেজুর গুড় কিনতে আসা পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, এ বছরে খেজুর গুড়ের দাম বেশি। হাটে আমদানি কম হওয়ায় গুড়ের দাম বেড়েছে।
সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর থেকে আসা পাইকারি গুড় ব্যবসায়ী সীদ্ধার্থ বাবু জানান, চুয়াডাঙ্গার খেজুরের গুড় পাইকারি কিনে নিয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করেন তিনি। গুড়ের মান ভালো হওয়ায় প্রতি হাটে ২ থেকে ৪ ট্রাক খেজুরের গুড় ক্রয় করেন তিনি। তবে গতবারের চেয়ে এবার দাম বেড়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলার খেজুর গুড় বিক্রেতাদের দাবি- স্থানীয় প্রশাসন যদি ইটভাটায় খেজুর গাছ পোড়ানো বন্ধ ও খেজুর গাছ কাটা বন্ধে একটু নজর দেয় তাহলে সরোজগঞ্জের গুড়ের হাট আবারো আগের মতো জমে উঠবে।