নামেই পার্ক, বিনোদনের সুবিধা নেই
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের হারুয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পার্কটি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। পার্কটিতে বিনোদনের কোনো সরঞ্জাম নেই। সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পার্কের ভেতর ময়লা-আবর্জনা জমে দুর্গন্ধময় পরিবেশ হয়েছে। তাই পার্কে অবকাশযাপন কিংবা বিনোদন উপভোগের সুযোগ নেই বললেই চলে।
স্থানীয়রা জানান, যান্ত্রিক কোলাহল থেকে একটু প্রশান্তি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই ঈশ্বরগঞ্জের একমাত্র এই পার্কটিতে। এটি শুধু নামেই পার্ক। এখানে নেই কোনও বিনোদনের সরঞ্জাম। এছাড়া সংস্কারও হয় না।
ধুলোবালি, দুর্গন্ধ ও শব্দ দূষণের কারণে এখানে বেশিক্ষণ থাকার উপায় নেই দর্শনার্থীদের।
জানা গেছে, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক সংলগ্ন হারুয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের একখণ্ড জমি ছিল। দখলদাররা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে ওই জমিটি দখল করে রাখতো। জমিটি দখলমুক্ত করতে ২০১২-১৩ সালের দিকে তৎকালীন সংসদ সদস্য মো. আবদুছ ছাত্তার জমিতে একটি পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেন। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের অর্থায়নে ওই জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে পার্ক স্থাপন করা হয়। কিন্তু পার্কটি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠেনি।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে পার্কের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য এক লাখ ৪৫ হাজার ৫৫৭ টাকা বরাদ্দ দেয় ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ সম্পন্ন হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কার্যালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) একটি প্রকল্প দিয়ে এক লাখ টাকা ব্যয়ে পার্কটিতে একটি ফটক নির্মাণ করা হয়।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রাচীর দিয়ে ঘেরা পার্কটির ভেতরে রয়েছে সারি সারি কিছু মেহগনি গাছ। নজরদারির অভাবে পার্কের সীমানা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে কিছু অবৈধ স্থাপনা।
পার্কের প্রবেশপথ উন্মুক্ত থাকায় ভেতরে গরু ছাগল চড়াচ্ছেন স্থানীয়রা। পার্কের ভেতরে নির্মাণ করা কংক্রিটের টেবিল থাকলেও ধুলোর আস্তরণে সেখানে বসার উপায় নেই। মানুষ যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ ও ময়লা-আবর্জনা ফেলায় পার্কটি দুর্গন্ধযুক্ত স্থানে পরিণত হয়েছে।
জাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান হলুদ বলেন, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পার্কটির বেহালদশা হয়েছে। এখানে দর্শনার্থীদের সময় কাটানোর মতো পরিবেশ নেই। নেই বিনোদনের নূন্যতম সুযোগ সুবিধা। তবে পরিকল্পিত সংস্কার, পর্যাপ্ত বিনোদন সুবিধা ও মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে পার্কটি প্রাণ ফিরে পাবে।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘পার্কটিকে সুন্দর পরিবেশ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’