কৃষি বিভাগের উদাসীনতায় পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে চাষি
এক সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটের উৎপাদিত পানে জমজমাট বাজার বসত। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানেও পাঠানো হতো এখানকার উৎপাদিত পান। তবে কৃষি বিভাগের উদাসীনতায় লাভ হওয়া সত্ত্বেও পান চাষ হতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা। এ কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে অন্য জেলা থেকে আসা পান।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, স্বাধীনতার পর অনেক বছর কানসাট ইউনিয়নে প্রায় ৪শ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। ওই এলাকায় এখন পান চাষ হচ্ছে মাত্র ১ হেক্টর জমিতে।
কানসাট এলাকার পান চাষি তরিকুল ইসলাম জানান, পারিবারিক সূত্রেই পান চাষের সঙ্গে জড়িত তিনি। এবারো ৫ কাঠা জমিতে পান চাষ করেছেন তিনি। এতে মোট খরচ হয়েছে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। তবে বর্তমানে ঘন কুয়াশার কারণে গাছের গোড়ার অংশের পান পঁচে যাচ্ছে। এ কারণে হতাশ তিনি।
তার দাবি- পান চাষে স্থানীয় কৃষি বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায় না। পানের বরজে একবার রোগ দেখা দিলে লোকসান হয়। মূলত লোকসানের হাত থেকে বাঁচতেই পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন এখানকার চাষিরা। তবে একটু যত্ন নিলে পান চাষে লাভই হয়।
বাগদুর্গাপুর গ্রামের পান চাষি পাঁচু আলী জানান, প্রায় ৬৫ বছর ধরে পান চাষের সঙ্গে জড়িত তিনি। বিগত দিনগুলোতে ৪-৫ বিঘা জমিতে পান চাষ করেছেন তিনি। তবে এবার মাত্র ১০ কাঠা জমিতে পান চাষ করেছেন। বর্তমানে কুয়াশার কারণে পানের বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি জানান, সরকার ও স্থানীয় কৃষি বিভাগ কোনো দিনই পান চাষিদের কথা শোনেনি। কোনো রকম সহযোগিতা করেনি। চাষিরা লোকসান গুনতে গুনতে পান চাষে আগ্রহ হারিয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।
কানসাট বাগদুর্গাপুর পান সমবায় সমিতির কোষাধ্যক্ষ মো. লিটন জানান, তিনি এবার এক বিঘা জমির পান কিনেছেন ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। এছাড়া নিজে ১৫ কাঠা জমিতে পানের বরজ তৈরি করেছেন। তাতে মোট খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা।
শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম আমিনুজ্জামান জানান, অন্য ফসলের চাইতে পানের গুরুত্ব অনেক কম। সে কারণেই তাদের সহযোগিতা করা হয় না।