ধানের বাজার মন্দা, বেজার মুখে তরমুজ চাষে ব্যস্ত চাষি!

  • আব্দুস সালাম আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

তরমুজ চাষে ব্যস্ত কৃষক/ছবি: বার্তা২৪.কম

তরমুজ চাষে ব্যস্ত কৃষক/ছবি: বার্তা২৪.কম

উপকূলীয় কৃষকরা সব থেকে বেশি আমন ধান আবাদ করেন। বিশেষ করে পটুয়াখালী জেলার শতভাগ জমিতেই আমন আবাদ করা হয়। তবে এবার সরকারিভাবে আমান ধান ক্রয়ের উদ্যোগ নিলেও স্থানীয় বাজার গুলোতে এর কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে এখন ৫০০ টাকা দরে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে উপকূলের অধিকাংশ এলাকায় বিশেষ করে কলাপাড়া, গলাচিপা, রাঙ্গবালী ও বাউফল উপজেলার কৃষকরা ধান বিক্রি না করে ক্ষেতে আগাম তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর এক্ষেত্রে অনেকেই বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋন নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছেন। তরমুজের ভালো ফলন পেলে বিক্রি করে ঋন পরিশোধ করবেন তারা।

বিজ্ঞাপন
ধান চাষে লাভবান হতে পারেনি কৃষক

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার কৃষক রহমান মৃধা বার্তা ২৪.কমকে বলেন, ‘হুনছি সরকার ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কেনবে, হেই জন্য ধান হুগাইয়া টাল দিয়া রাখছি। হেদনাগো উপজেলায় খোঁজ নিছি হেরা কইছে আমাগো নাম এহনও লটারিতে ওডে নাই। এহন কি আর করমু ধান হেইরোম পইর‌্যা আছে। এনজিও দিয়া লোন লইলা তরমুজের খলা বানাইতে আছি। সরকার ধান নেলে নেবে, নাইলেতো ৫শ সাড়ে ৫শ টাহা দরে হাডে বেইচ্যা দেতে হইবে। এখন বদলা পাওন যায় না। তিন বেলা খাওন দেয়া লাগে হের পর ৫শ টাকা ডেলিতে বদল লইছি। আল্লায় যদি দেয় আবহাওয়া ভালো থাহে হেলে তো সিজনে তরমুজ বেইচ্যা ঋন শোধ করমু। আর দাম না পাইলে তো জমি জিরাত থুইয়া পলান লাগবে।’

রহমান মৃধার মতো অধিকাংশ কৃষকরাই আগে ভাগে তরমুজ তুলতে পারলে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন এমন আশা নিয়ে দিন রাত পার করছেন ফসলের মাঠে। তবে এবার বিগত বছরের থেকে জেলায় বেশি পরিমাণ জমিতে তরমুজের আবাদ হওয়ার কথা বলছে জেলা কৃষি বিভাগ।

বিজ্ঞাপন
আগাম তরমুজ চাষ শুরু করেছেন কৃষক

পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত জানান, পটুয়াখালী জেলায় গত বছর ১০ লাখ ৮৪ হাজার ১০০ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদন হয়, যা আবাদ হয় ২১ হাজার ৬শ ৮২ হেক্টর জমিতে। তবে এবার এর থেকে অধিক জমিতে তরমুজ আবাদের আশা করছেন তারা। এরই ধারাবাহিকতায় জেলায় ইতোমধ্যে ৩৪০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কৃষকের উৎপাদন ফসলের নায্য দাম নিশ্চিত করতে পারলে সরকারি সহযোগিতা ছাড়াই কৃষকরা তাদের জীবন জীবিকার পরিবর্তন করতে সক্ষম হবেন বলে মনে করেন উপকূলের কৃষকরা। তাইতো তরমুজের নায্য দাম নিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের দাবী জানান কৃষক।