মাতাল হয়ে স্ত্রী, শাশুড়ি ও দুই প্রতিবেশীকে হত্যা
স্ত্রী, শাশুড়ি ও দুই প্রতিবেশীসহ চারজনকে হত্যাকালে খুনি নির্মল অতিরিক্ত মাদকাসক্ত ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াসিনুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেছেন, স্ত্রী, শাশুড়ি ও দুই প্রতিবেশীসহ চারজনকে হত্যাকালে খুনি নির্মল মাদকাসক্ত ছিলেন। অতিরিক্ত মদ পানের কারণে মাতাল হয়ে নির্মল কর্মকার (৪০) এই ঘটনা ঘটান।
ওসি জানান, তার বাড়ি এই এলাকায় নয়। বছরখানেক আগে ডলির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এরপর থেকে তিনি শ্বশুর বাড়িতেই ছিলেন। পারিবারিক কলহের জের ধরেই স্ত্রী, শাশুড়ি ও দুই প্রতিবেশীসহ চারজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন নির্মল। পরে খুনি নিজেই তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খুনি নির্মল ছাড়া অন্য চারজনই চা বাগানের শ্রমিক।
হত্যাকাণ্ডের শিকার চারজন হলেন, নির্মলের স্ত্রী জলি ব্যানার্জি (৩৫), তার শাশুড়ি লক্ষ্মী ব্যানার্জি (৫০), পাশের ঘরের বসন্ত ভৌমিক (৫৫), বসন্তের মেয়ে শিউলি ভৌমিক (১৬)। এছাড়া নির্মলের দায়ের কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন বসন্ত ভৌমিকের স্ত্রী কানন ভৌমিক। তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পাল্লাতল চা বাগানে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে দুপুরের দিকে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: বড়লেখায় স্ত্রীসহ ৪ জনকে হত্যার পর আত্মহত্যা
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ভোর ৫টার দিকে নির্মল ও ডলির মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে ডলিকে মারধর করতে থাকলে ডলি দৌড়ে অন্য ঘরে বাবা মায়ের কাছে চলে আসেন। তখন নির্মল ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডলিকে কোপাতে থাকেন। মেয়েকে রক্ষা করতে শাশুড়ি ছুটে আসলে তাকেও কোপান নির্মল। এরপর বসন্ত ও শিউলি সেখানে আসলে দুজনকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে নির্মল। পরে চারজনের মৃত্যু হলে নির্মল নিজের ঘরে গিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
খবর পেয়ে মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ, কুলাউড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কাউসার দস্তগীর সহ অন্যান্য পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাগণ।
পাল্লাতল চা বাগানের ম্যানেজার এবিএম মাহবুবুর রহমান জানান, নির্মলের বাড়ি এই এলাকায় নয়। বছর খানিক আগে ডলির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তারপর থেকে তিনি শ্বশুর বাড়িতেই স্ত্রীর সঙ্গে থাকছিলেন।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে। পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার মূল কারণ উদঘাটনের জন্য চেষ্টা চলছে।