নওগাঁয় বীজতলা রক্ষায় কৃষকের পানি, ঔষধ ও পলিথিন ব্যবহার
ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে নওগাঁয় বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে কৃষকেরা ধান চাষ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন ।
গত দুই দিন জেলার মান্দা, মহাদেবপুর, সাপাহার, পত্নীতলা, বদলগাছী, রানীনগর ও নওগাঁ সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বীজতলা রক্ষায় পানি এবং বিভিন্ন কোম্পানির ঔষধ ছিটাচ্ছেন কৃষকেরা।
কেউ কেউ ঘন কুয়াশার হাত থেকে বাঁচতে পলিথিন ব্যবহার করছেন। তবে অধিকাংশ কৃষক গরিব বর্গাচাষি হওয়ায় তাঁদের নিজস্ব সেচব্যবস্থা ও পলিথিন নেই। বীজতলা রক্ষায় তাঁরা কলাগাছের পাতা দিয়ে বীজতলা ঢেকে রেখেছেন। ইতোমধ্যে যাদের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে, তাঁরা নতুন করে বীজতলা তৈরির চেষ্টা করছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে মেঘলা আবহাওয়া, শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার হাত থেকে বীজতলাকে রক্ষা করতে কৃষকদের আদর্শ বীজতলা তৈরির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
মান্দা উপজেলার গনেশপুর গ্রামের কৃষক কাজী আবুল কাসেম জানান, এ বছর তিন একর জমিতে বোরো চাষের জন্য তিনি ১ বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে বীজতলা তৈরি করেছেন। কিন্তু ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের প্রকোপে ইতোমধ্যে বীজতলার আংশিক চারা নষ্ট হয়ে গেছে।
নওগাঁ সদরের চকবাড়িয়া গ্রামের কৃষক সাহেব আলী বলেন, শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশা বৃদ্ধি পাওয়া নতুন করে বীজতলা তৈরিতেও সমস্যা। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এখনতো ধান বীজ থেকে গাছ বের হওয়ার আগেই পচে যাবে । ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় সেচ দিতে খরচ পড়বে বেশি।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ সিরাজুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন, বৈরী আবহাওয়ার হাত থেকে বীজতলা রক্ষায় কৃষকদের আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বীজ তলা রক্ষায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা, আক্রান্ত বীজতলা পানি দিয়ে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখা এবং প্রয়োজনে চারার মধ্যে জমে থাকা শিশির শক্ত কিছু দিয়ে ফেলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেসব কৃষক আগেই বীজতলা তৈরি করেছেন ওই সব চারা কিছুটা কোল্ড ইনজুরিতে ভুগতে পারে। আর যারা দেরিতে বীজতলা করছেন তাঁদের সমস্যা কিছুটা কম হবে । সব মিলিয়ে বোরো ধান চাষে নওগাঁয় খুব বেশি প্রভাব পড়বে না কারণ এবারে কৃষকেরা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি বীজতলা তৈরি করেছেন।