সিলেটের পাথর কোয়ারিতে ৩ বছরে ৭৬ মৃত্যু
কোনও প্রকার সুরক্ষা উপকরণ ছাড়া সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছেন শ্রমিকরা। এতে একের পর এক শ্রমিকের মৃত্যু হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত সিলেটের পাথর কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনকালে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৭৬ শ্রমিক।
জানা গেছে, সিলেটের সীমান্তবর্তী চার উপজেলায় রয়েছে আটটি পাথর কোয়ারি। এগুলো হলো- কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, শাহ আরেফিন টিলা ও উৎমাছড়া, গোয়াইনঘাটের জাফলং ও বিছানাকান্দি, জৈন্তাপুরের শ্রীপুর, কানাইঘাটের লোভাছড়া ও বাংলাটিলা। এসব কোয়ারিতে অবৈধভাবে গর্ত করে পাথর উত্তোলনের সময় মাটি ধসে শ্রমিকদের মৃত্যু হচ্ছে।
বেলা জানায়, ২০১৭ সালে পাথর উত্তোলনকালে নিহত হন ৩৩ জন শ্রমিক। ২০১৮ সালে ৩২ জন ও ২০১৯ সালে ৯ জন আর চলতি বছরের গত ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ২ জন শ্রমিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।
সবশেষ গত সোমবার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরেফিন টিলায় গর্ত করে পাথর উত্তোলনের সময় মাটি ধসের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় পাথরখেকো আইয়ুব আলীর মালিকানাধীন গর্তে মাটি চাপা পড়ে মারা যান সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দৌলরা গ্রামের বাসিন্দা লিটন মিয়া। গুরুতর আহত হন আরও তিন শ্রমিক। এর মাত্র চার দিন আগে কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে ‘বোমা মেশিনের’ বেল্ট ছিঁড়ে মারা যান আবদুস সালাম নামে এক শ্রমিক।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ শাহেদা বলেন, পাথর কোয়ারিতে শ্রমিকের মৃত্যু বন্ধ করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা। যতদিন পাথরখেকোরা রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয় পাবে ততদিন অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধ হবে না।
এ বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এসব অপকর্মের পেছনের মূল হোতাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।