বানিয়াচংয়ে ঐতিহ্যবাহী পলো উৎসব

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, হবিগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পলো উৎসবে অংশ নেওয়া গ্রামবাসী, ছবি: সংগৃহীত

পলো উৎসবে অংশ নেওয়া গ্রামবাসী, ছবি: সংগৃহীত

পলো, বাঁশ দিয়ে তৈরি মাছ শিকারের এক ধরনের ফাঁদ। এক সময় পলো দিয়ে মাছ শিকার করা বেশ জনপ্রিয় ছিল গ্রামীণ সমাজে। বিশেষ করে পৌষ-মাঘ মাসে বিল বা উন্মুক্ত হাওরে দল বেঁধে মাছ শিকার করা হতো। যাকে বলা হয় ‌পলো বাইছ বা পলো উৎসব।

জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় এবং কালের পরিক্রমায় এখন সেই পলো উৎসব হারিয়ে গেছে। তবে এখনো হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি বিলে এই পলো উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

গ্রামীণ ঐতিহ্যকে লালন করে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বানিয়াচং উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের আতুকুড়া গ্রামের বড়আন বিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে পলো উৎসব। বেলা সাড়ে ১১টায় ঐতিহ্যবাহী এই পলো উৎসবে অংশ নিয়েছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত নানা বয়সের কয়েকশ মানুষ।

পলো উৎসবে মাছ ধরতে প্রস্তুতি নিচ্ছে গ্রামবাসী
পলো উৎসবে মাছ ধরতে প্রস্তুতি নিচ্ছে গ্রামবাসী

দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা এই উৎসব শেষে সবাইকে কম বেশি মাছ নিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। শৈল, গজার, বোয়াল, বিভিন্ন কার্প জাতীয় মাছসহ নানা প্রজাতির মাছ ধরেছেন অনেকেই।

বিজ্ঞাপন

হবিগঞ্জ পৌরসভার উমেদনগর এলাকার মাছ শিকারি মো. রমিজ আলী বলেন- ছোটবেলায় দেখতাম অনেক বড় করে এই পলো উৎসব অনুষ্ঠিত হতো। কিন্তু এখন আর আগের মতো হয় না, আর মাছও পাওয়া যায় না। তবুও প্রতিবছরই এই পলো উৎসবে আসি।

বালিখাল এলাকার বিমল দাস বলেন- এখানে মাছ ধরাটা মুখ্য নয়। হাজার হাজার মানুষের সাথে মাছ ধরা প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে খুবই ভালো লাগে। তাই প্রতিবছরই আসি। তবে যারা নিয়মিত মাছ ধরেন তাদের সাথে আমরা পারি না। কিন্তু সত্যি কথা ভালো লাগার কারণেই আসা।

একই এলাকার জুবায়ের আহমেদ বলেন, ‘এলাকার নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। তবে মাছ না পাওয়া গেলেও ভালো লাগে বলে প্রতি বছরই আসি।’

পলো উৎসব শেষে বাড়ি ফিরছেন দুইজন
পলো উৎসব শেষে বাড়ি ফিরছেন দুইজন

তিনি বলেন- ‘এটি বাঙালি ঐতিহ্যের একটি উৎসব। এই উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে নদী-জলাশয় রক্ষাসহ মাছের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবকে বাঁচিয়ে রাখতে নদী রক্ষার দাবি জানিয়েছে উৎসবে আসা মানুষজন। পাশাপাশি মাছের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান তারা।