পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করতে মাকে খুন করে মেয়ে
মানিকগঞ্জ শহরের দক্ষিণ সেওতা এলাকায় গৃহবধূ মাহমুদা বেগমকে (৪৫) হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মা মাহমুদা বেগমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মেয়ে জ্যোতি আক্তার।
এ হত্যাকাণ্ডে জ্যোতির সহযোগী ছিল প্রেমিক ও তার তিন বন্ধু। মানিকগঞ্জের দক্ষিণ সেওতা গ্রামে গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) ঘরে ঢুকে গৃহবধূ মাহমুদা বেগমকে হত্যা করা হয়।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে আসামি প্রেমিক নাঈম ও তার বন্ধু রাকিব মানিকগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিনিয়র বিচারক শাকিল আহম্মেদের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামিম আল মামুন জানান, গত নভেম্বরে জ্যোতির সঙ্গে তার স্বামীর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এর মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের আরাকুল গ্রামের নাঈমের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তারা নিজেরা বিয়ের জন্য প্রস্তুতিও নেয়। কিন্তু জ্যোতির মা মাহমুদা বেগম এতে রাজি ছিলেন না। তিনি মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পাশাপাশি মেয়েকে শাসনও করতেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন জ্যোতি।
ঘটনার আগের দিন ২১ জানুয়ারি রাতে প্রেমিক নাঈম ও তার ৩ বন্ধু অবস্থান নেন জ্যোতির শোবার ঘরে। ওই ৩ বন্ধুকে ভাড়া করা হয় দেড় লাখ টাকায়। এর মধ্যে জ্যোতি ওই ৩ বন্ধুকে তার স্বর্ণালংকার এবং নগদ ১৬ হাজার টাকা দেন। রাতেই মাহমুদা বেগমকে হত্যা করার পরিকল্পনা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।
২২ জানুয়ারি সকালে জ্যোতির বাবা জহিরুল ইসলাম বাড়ির বাইরে বের হলে গলা টিপে মাহমুদা বেগমকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডকে ডাকাতি সাজিয়ে ওই সময় বক্তব্য দেন জ্যোতি আক্তার। কিন্তু তার কথায় সন্দেহ হলে ঘটনার দিনই জ্যোতিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় নাঈম ও রাকিব নামে এক বন্ধুকে। অন্য দুই বন্ধুকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আদালতে হাজির করার পর জ্যোতিকে ৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। জ্যোতি আক্তার রোববার ও অপর দুই আসামি রাকিব ও নাঈম সোমবার আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান এসআই।