সৌদি থেকে মরদেহ আনার সামর্থ নেই পরিবারের
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ি ইউনিয়নের আউলাতৈল গ্রামের আল আমিনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান হারিয়ে পাগলপ্রায় বাবা ফরহাদ আলী ও মা খাতু বেগম।
জানা গেছে, দুই ভাই-বোনের মধ্যে আল আমিন ছিলেন ছোট। পাঁচ বছর আগে স্থানীয় আউলিয়া-বাদ গ্রামের বাবুলের মেয়ে বিলকিসকে বিয়ে করেন তিনি। অভাবের সংসারের হাল ধরতে প্রায় এক যুগ আগে সৌদি আরবের জেদ্দায় পাড়ি জমান তিনি। সেখানে প্রথমে আল ওয়ান কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন আল আমিন।
পরবর্তীতে তিন বছর আগে সেখান থেকে জেদ্দার ইয়ামামা নামের একটি ক্লিনিং কোম্পানিতে পরিচ্ছন্নকর্মী হিসেবে যোগ দেন। স্থানীয় সময় বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে জেদ্দার হাইআল সামির এলাকায় তাদের বহনকারী গাড়িটিকে একটি বড় লরি ধাক্কা দেয়। এতে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আল আমিন। ৫ বছরের সংসার জীবনে আল আমিন ও বিলকিসের কোনো সন্তান ছিলো না। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি ছুটিতে দেশে আসার কথা ছিল তার।
আল আমিনের বাবা ফরহাদ আলী জানান, প্রায় একযুগ আগে ঋণ করে পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে আল আমিনকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। ওর মা ও আমি অসুস্থ থাকায় এতো দিনেও ঋণ পরিশোধ করতে পারিনি।
পরিবারের পক্ষ থেকে আল আমিনের মরদেহ আনার ক্ষমতা নেই জানিয়ে মরদেহ ফেরৎ পেতে সরকারের কাছে জোর দাবী জানিয়েছেন আল আমিনের অসুস্থ বাবা।
আল আমিনের স্ত্রী বিলকিস বেগম জানান, ৩ বছর আগে তিনি ছুটিতে এসেছিলেন। অসুস্থ বাবা-মাকে দেখতে ১০ ফেব্রুয়ারি তার দেশে আশার কথা ছিলো। বুধবার দুপুরে তার সাথে সর্বশেষ কথা হয়। ওই দিন বিকেলেই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবর আসে।
মরদেহ ফেরতসহ সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন আল আমিনের স্ত্রী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, আল আমিনের উপার্জনের টাকায় কোন মতো চলতো তার সংসার। এখন আর পরিবারের হাল ধরার মতো কেউ নেই। অন্যদিকে রয়েছে ঋণের বোঝা। বাড়িটুকু ছাড়া আর তাদের কোন জমিও নেই।
পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ আনা সম্ভব না। অসহায় এ পরিবারের দিকে নজর দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে তিনি।