ভোলায় জনপ্রিয়তা বাড়ছে ওয়াটার বাসের

  • মোকাম্মেল মিশু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ভোলা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভোলা-ঢাকা রুটের ওয়াটার বাস, ছবি: বার্তা২৪

ভোলা-ঢাকা রুটের ওয়াটার বাস, ছবি: বার্তা২৪

দ্বীপজেলা ভোলা থেকে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌযান। তাই এ জেলার মানুষ দুপুর ২টার আগে কিংবা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর ঢাকা যেতে পারতেন না। রাতে কুয়াশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হতো। গত মাসে দ্রুত গতির ওয়াটার বাস গ্রিনলাইন এবং এ মাসে অ্যাডভেঞ্চার-৫ চালু হওয়ায় এখন দিনের বেলায়ও ঢাকায় যেতে পারছেন ভোলাবাসী ।

আগে যেখানে রাতের আঁধারে লঞ্চে করে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টায় যাতায়াত করতে হতো, এখন মাত্র ৪ থেকে ৫ ঘণ্টায় ওয়াটার বাসে যাতায়াত করতে পারছেন যাত্রীরা। এতে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের মাধ্যমে নৌ-বিহারের বাড়তি সুবিধা থাকায় ভোলায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে মুমূর্ষু রোগীর জরুরি চিকিৎসার জন্য বিনা ভাড়ায় ঢাকা নেওয়া এবং ঢাকা থেকে বিনা ভাড়ায় মরদেহ ভোলায় আনারও সুযোগ রয়েছে এই ওয়াটার বাসে। তবে এসব ওয়াটার বাসের ভাড়া কমানোর দাবিও রয়েছে যাত্রীদের।

বিজ্ঞাপন

ওয়াটার বাসে দেখা হয় সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত নাজিউর রহমানের স্ত্রী শেখ রেবা রহমানের সঙ্গে। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আগে যাতায়াতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লাগতো, খুব কষ্ট হতো। এখনতো ৫ ঘণ্টায় সম্ভব হচ্ছে। এতে মানুষের জন্য অনেক সুবিধা। বিশেষ করে সরকারি চাকরিজীবীরা সময় মতো গিয়ে অফিস করতে পারছে।’

গ্রীনলাইনে ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা

চাকরি পরীক্ষার্থী মাইনুল বলেন, ‘আগে যখন আমাদেরকে বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিতে হতো, তখন ঠিক মতো যেতে পারতাম না। এই সার্ভিস চালু হওয়াতে আমরা দিনাদিন ঢাকায় যেতে পারছি।’

বিজ্ঞাপন

চিকিৎসা প্রত্যাশী মো. মোস্তাফিজ বলেন, ‘এখন ঠিক মতো ঢাকায় গিয়ে ডাক্তার দেখাতে পারছি।’

গৃহিণী রোকসনা বলেন, ‘এখন আত্মীয় স্বজনের অসুস্থতার খবর পেলে কম সময়ের মধ্যে ভোলায় আসতে পারি। তবে ওয়াটার বাসের ভাড়া একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।’

ভোলা পর্যটনের জন্য প্রচার অভিযানের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল হক অনু বলেন, ‘গ্রিনলাইন ও অ্যাডভেঞ্চার চালু হওয়াতে ভোলায় পর্যটনের সংখ্যা বাড়ছে। এ ধরনের লঞ্চ আরও দরকার।’

গ্রিনলাইন ভোলা অফিসের কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম রনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘গ্রিনলাইনে মুমূর্ষু রোগীদের ভাড়া নেওয়া হয় না, ঢাকা থেকে যেকোনো মরদেহ দুইজন স্বজনসহ বিনা ভাড়ায় ভোলায় আনি, প্রয়োজনে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি।’

ওয়াটার বাস

তবে কোনো প্রকার পরিকল্পনা ছাড়া তড়িঘড়ি করে ইলিশা ঘাট থেকে দিনের বেলায় অত্যাধুনিক ওয়াটার বাস চালু হলেও ঘাটে প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। ইলিশা ঘাটে নেই মানসম্মত পন্টুন। নেই গ্যাংওয়ে, জেটি, যাত্রী ছাউনি ও টয়লেট ব্যবস্থা। নদী তীরে ব্লক থাকায় পন্টুনে ঠিকমতো ওয়াটার বাস ভিড়তে পারছে না। এছাড়া গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধাও নেই এই ঘাটে।

ভোলা নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘যাত্রী সাধারণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এতে যাত্রী ছাউনি বিশ্রামাগার এবং টয়লেট ব্যবস্থাসহ যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা থাকবে। প্রকল্পটি শিগগিরই বাস্তবায়িত হবে।’