কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে রোমাঞ্চকর সমুদ্র ভ্রমণ

  • মুহিববুল্লাহ মুহিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে সমুদ্র ভ্রমণে জাহাজ উদ্বোধন করা হয়, ছবি: বার্তা২৪.কম

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে সমুদ্র ভ্রমণে জাহাজ উদ্বোধন করা হয়, ছবি: বার্তা২৪.কম

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দ্বীপটিতে যেতে হলে কক্সবাজারের টেকনাফ হয়ে যেতে হতো। এতে কমপক্ষে প্রায় তিন ঘণ্টার বেশি ভোগান্তি পোহাতে হতো পর্যটকদের।

৯৫ কিলোমিটার সমুদ্র পাড়ি দিয়ে সরাসরি কক্সবাজার শহর থেকেই ছেড়ে যাবে ‘এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস’ নামের একটি বিলাসবহুল জাহাজ। দ্বীপে গিয়ে আবার ফিরে আসতে পাড়ি দিতে হবে ৯৫ কিলোমিটার। প্রতিদিন মোট ১৯০ কিলোমিটার রোমাঞ্চকর সমুদ্র ভ্রমণের সঙ্গে মেতে উঠতে পারবেন যাত্রীরা।

বিজ্ঞাপন

জাহাজ কর্তৃপক্ষ জানায়, ৯৫ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন পৌঁছাবে। পুনরায় ৯৫ কিলোমিটার সমুদ্র পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার ফিরবে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস। এছাড়া জাহাজ থেকে সমুদ্র, পাহাড় আর সূর্যাস্তের দৃশ্যসহ নানান রোমাঞ্চকর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন যাত্রীরা।

নতুন জাহাজের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজারের শহরের নুনিয়ারছড়া এলাকায় বাকখালী নদীর মোহনায় জাহাজটির উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে মাঝ সমুদ্রে চলে নানান আনুষ্ঠানিকতা।

বিজ্ঞাপন

প্রথম দিনেই জাহাজটিতে ভ্রমণে আসা পর্যটক নাজমা আক্তার বলেন, ‘এর আগে একবার সেন্টমার্টিন যাওয়া হয়েছে। ওই জাহাজগুলোর চেয়ে এটি অনেক উন্নতমানের। সময়ের চেয়ে টেকনাফ যেতে যে ভোগান্তি পোহাতে হতো, তা অনেকটা কমে আসবে।’

স্কুল শিক্ষক রাজিবুল ইসলামও সংক্ষিপ্ত ভ্রমণে গিয়েছেন। তিনি বার্তা ২৪.কম-কে বলেন, ‘এ জাহাজটি দেখলাম খুব দ্রুতগতিতে চলছে। দুর্ভোগ থেকে যেমন মুক্তি মিলবে পর্যটকদের তেমনি ভ্রমণও আনন্দ পাওয়া যাবে।’

জাহাজের লাক্সারি সিট

জাহাজটির কক্সবাজারের পরিচালক এম হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বার্তা ২৪.কম-কে বলেন, ‘কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়ারছড়া (এয়ারপোর্ট রোড) বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে নিয়মিত প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে নিয়মিত ছেড়ে যাবে জাহাজটি। প্রতিদিন সকাল ৭টায় ঘাট থেকে ছাড়বে এবং বিকেল ৩টায় আবার কক্সবাজার ফিরে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইকোনমি আসনের (২য় শ্রেণি চেয়ার) ভাড়া জন প্রতি দুই হাজার টাকা। বিজনেস আসনে (১ম শ্রেণি চেয়ার) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার ৫০০ টাকা। মোট ১৭টি লাক্সারি ক্লাস কেবিন রয়েছে এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজটিতে। এদের মধ্যে ইকোনমি শ্রেণি কেবিনের (২য় শ্রেণি) ভাড়া ১২ হাজার টাকা ও লাক্সারি ক্লাস (ভিআইপি) কেবিনের ভাড়া ১৫ হাজার টাকা। প্রতিটি কেবিন দুইজনের জন্য প্রযোজ্য, অতিরিক্ত জন প্রতি আলাদা সাধারণ টিকিট কেটে নিতে হবে। প্রতিটি টিকিটের সঙ্গে সৌজন্যমূলক নাস্তা অন্তর্ভুক্ত আছে। আর ভাড়া হচ্ছে আপ–ডাউন বা আসা–যাওয়াসহ। কোনো যাত্রী ভিন্ন তারিখে ফিরতে চাইলে তা টিকিট সংগ্রহ করার সময় উল্লেখ করতে হবে।’

প্রথম দিনের ভ্রমণে থাকে নানা আয়োজন

জাহাজটির সেকেন্ড মাস্টার রাশেদ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘প্রায় ৫৫ মিটার দীর্ঘ ও ১১ মিটার প্রশস্ত জাহাজটিতে মেইন প্রাপালেশন ইঞ্জিন হচ্ছে দুটি। আমেরিকার বিখ্যাত কামিন্স ব্র্যান্ডের এক একটির ক্ষমতা প্রায় ৬০০ বিএইচপি করে। জাহাজটি ঘণ্টায় প্রায় ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে ছুটতে পারে। ১৭টি ভিআইপি কেবিন সমৃদ্ধ। এই নৌযানে ভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় ৫১০টি আসন ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে প্রশস্ত কনফারেন্স হল রুম, ডাইনিং স্পেস, সিভিউ ব্যালকনি।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আদিবুল ইসলাম, কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এমএরশিদ, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম সরওয়ার কামালসহ অন্যান্যরা।