৪ বছর পর ঝালকাঠির জাহিদ হত্যা মামলার চার্জশিট গঠন
প্রায় চার বছর পর ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় আলোচিত জাহিদ হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত মিজান খলিফা ও মিরাজ মৃধা নামে দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করা হয়েছে।
রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ মো. তোফায়েল হাসান দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় আসামিদের অনুপস্থিতে এ চার্জ গঠন করেন। এ সময় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক।
মামলাটি রাস্ত্রপক্ষে আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আ.স.ম মোস্তাফিজুর রহমান মনু ও বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. আক্কাস সিকদার পরিচালনা করেন। এ সময় আসামিদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল আলীম।
আদালত সূত্রে মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১০ মে ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় টোল আদায়ের কাজ করছিলেন একই এলাকার মো. ফারুক হোসেনের ছেলে মো. জাহিদ হোসেন (২৭)। সকাল ৯ টার দিকে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির খানের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত মিজান খলিফার মালিকানাধীন একটি ট্রলিতে টোল দাবি করলে জাহিদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় মিজান খলিফা।
একই দিন সন্ধ্যা ৬ টার দিকে টোল প্লাজায় ডিউটি করা কালে মিজান খলিফা ও মিরাজ মৃধা লোহার রড ও পাইপ নিয়ে হামলা চালায় জাহিদের ওপর। এসময় জাহিদের মাথায় মারাত্মক জখম করে মিজান ও মিরাজ পালিয়ে যায়।
পরে টোল প্লাজার কর্মীরা জাহিদকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে জাহিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ওই বছরের ১৬ মে জাহিদ মারা যান। জাহিদ মারা যাওয়া আগেই জাহিদের বাবা ফারুক হোসেন ঝালকাঠি থানায় একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
জাহিদ মারা যাওয়ার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই গৌতম কুমার ঘোষ আদালতের অনুমতি নিয়ে একই বছর ৩১ ডিসেম্বর আসামি মিজান ও মিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১৭ সালের ৭ জুলাই মামলাটি বিচারের জন্য ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নথিভুক্ত হয়। দুই আসামি হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নিয়ে প্রায়ই আদালতে গড় হাজির থাকেন এবং অভিযোগ গঠনের জন্য সময়ের আবেদন করে।
২০১৯ সালের ৩ মার্চ জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে মামলাটি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বদলি করা হয়। রোববার মামলার ধার্য তারিখে দুই আসামি অনুপস্থিত থেকে তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে অভিযোগ গঠন এবং অব্যাহতির দরখাস্ত শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করলে আদালতের বিচারক সময়ের আবেদন এবং অব্যাহতির আবেদন না মঞ্জুর করে আসামির প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন এবং অভিযোগ গঠন করেন। আগামী ১ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে বলেও বার্তা২৪.কম কে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আক্কাস সিকদার।