জয়দেবপুর জংশন থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা চাঁদা আদায়



মাহমুদুল হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের পরিমাণ ৫ দশমিক ৯৫ একর। এর মধ্যে প্রায় দুই একর জমি বেদখল। যেখানে গড়ে উঠেছে প্রায় পাঁচশ’ অবৈধ দোকানপাট। এখান থেকে বছরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। প্রভাবশালীদের কবল থেকে এ সম্পত্তি উদ্ধারে রেলওয়ে প্রশাসনের কোন উদ্যোগ নেই।

অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ে পুলিশ, জংশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা এবং অবৈধ মার্কেট কমিটির সদস্যরা চাঁদার টাকার ভাগ নেন। গত আড়াই বছরে এসব স্থাপনা উচ্ছেদে ১৫ বারের বেশি অভিযান চালিয়েও দখল ঠেকানো যাচ্ছে না।

জয়দেবপুর জংশন এলাকার অবৈধ দোকানপাট বরাদ্দ দিতে এবং প্রতিদিন চাঁদা তোলার জন্য একটি কমিটি রয়েছে। ওই কমিটির সভাপতি জংশনের চা-বিক্রতা বাচ্চু মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক জুতা বিক্রেতা তাজু মিয়া। এ দুজন ছাড়াও বার্তা২৪.কমের অনুসন্ধানে সোহরাব, খোকা, মামুন, লাল মিয়া, ফরিদ ও কাজলের নাম জানা গেছে। যারা স্থায়ী ও ভাসমান দোকান থেকে প্রতিদিন চাঁদা তোলেন।

রেলওয়ের জমিতে শ্রমিক লীগের দুটি কার্যালয়, কলা ও ফলের দোকান, চা-সিগারেটের দোকান, খাবার হোটেল, স্টেশনারি, কাপড়, জুতা, কসমেটিকস ও খেলনার দোকানসহ গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রেললাইনের দুই পাশে অবৈধ স্থাপনার পাশাপাশি রেললাইনের উপরে ভাসমান দোকান বসছে। প্রায় তিনশটি বড় সাইজের আর তুলনামূলক ২৫০টির মতো ছোট দোকান রয়েছে। প্রতিদিন বড় দোকানগুলো থেকে পানি ও বিদ্যুৎ বিল এবং পাহারাদারের বেতনের নাম করে খরচ বাবদ ২০০ টাকা করে চাঁদা উঠানো হচ্ছে। একই অজুহাতে ছোট দোকানগুলো থেকে ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়।

এ ছাড়াও রেললাইনের উপরে বসা ভাসমান হকারদের কাছ থেকে গড়ে প্রতিদিন ৩-৫ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯০ হাজার টাকা জংশন ও এর আশপাশ এলাকার দোকানপাট থেকে চাঁদা আদায় করা হয়। যা বছরে গিয়ে সাড়ে তিন কোটি টাকায় ঠেকছে।

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে অবৈধ দোকানপাট

এলাকাবাসীর অভিযোগ, জয়দেবপুর জংশনে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত গেট থাকা সত্ত্বেও কিছু অসাধু ব্যক্তি জংশনের পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীর ভেঙে একটি বড় রাস্তা তৈরি করেছে। এরপর জংশনের পশ্চিম পাশে রেলওয়ের জমিতে দোকানপাট তৈরি করে ভাড়া দিয়েছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকার ভেদে প্রতিটি দোকান বরাদ্দের জন্য এককালীন চাঁদা দিতে হচ্ছে ১৫শ’ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এভাবে প্রায় অর্থ কোটি টাকা দোকান বরাদ্দ বাবদ নেওয়া হয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অবৈধ দোকানপাট খোলা থাকে। জংশনে দিনের ও রাতের চিত্র ভিন্ন। রাতে এই জংশনের আশপাশে অনৈতিক কাজও হচ্ছে। পাশাপাশি বসছে মাদকের অদৃশ্য হাট। যেখানে সহজেই গাঁজা, ইয়াবাসহ নেশাজাতীয় নানা দ্রব্য পাওয়া যায়। এর জন্য অপরাধী, মাদকসেবী ও ভবঘুরে ব্যক্তিদের ভিড় থাকে জংশনে।

এ জংশন দিয়ে দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের ৭২টি ট্রেন চলাচল করে। বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা মাথায় নিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ হাজার যাত্রী দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। অনেকে ছিনতাইকারী ও পকেটমারদের কবলেও পড়েন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ জন ব্যবসায়ী চাঁদা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, প্রতিদিন চাঁদার টাকা দিতে হয়। পানি, বিদ্যুৎ, ঝাড়ুদার ও নাইট গার্ডদের বেতনের কথা বলে চাঁদা তোলা হয়। আর দোকান চালু করতে জামানতের নামে অফেরৎযোগ্য মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়। বাচ্চু মিয়া এবং তাজু মিয়া মার্কেটের দেখভাল করেন। তারাই সবার কাছে চাঁদার ভাগ পৌঁছে দেন। এখানে এসব তদারকির জন্য একটি কমিটি রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার ক্ষমতা কারও নেই। দোকান করতে হলে তাদের কথা মতোই চলতে হবে।

সরাসরি এবং ফোনে তিন দিন চেষ্টা করেও অবৈধ মার্কেট কমিটির সভাপতি বাচ্চু মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক তাজু মিয়ার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনে অবৈধ দোকানপাট

জয়দেবপুর জংশন ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আব্দুল মান্নান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি দুই মাস আগে এখানে যোগদান করেছি। এখান থেকে একটি পয়সাও নিই না। আগেও বহুবার চাঁদার টাকার ভাগ নেওয়ার প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি। যারা আমার নামে চাঁদা তোলে তাদের খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জয়দেবপুর জংশনের স্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান বার্তা২৪.কমকে বলেন, রেলের জমি দেখাশোনা করে আমাদের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। এই জংশনে আড়াই বছর ধরে আছি। এই সময়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে ১৫ বারের বেশি অভিযান চালানো হয়েছে।

বার বার উচ্ছেদের পরও পুনরায় কিভাবে দোকানপাট বসছে প্রশ্নে তিনি বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজনের কারণে দখলমুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। তারা দোকানপাট তদারকির জন্য অফিস খুলে বসেছে।

অসহায়ত্ব প্রকাশ করে স্টেশন মাস্টার বলেন, মাত্র ৫ মাস আছে চাকরির মেয়াদ। এখন বিস্তারিত বললে দেখা যাবে তারা আমার উপর লাঠি-সোঁটা নিয়ে চড়াও হবে, মানসম্মান নষ্ট করবে।

চাঁদার ভাগ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি আরও বলেন, জংশনে ডাবল লাইনের কাজ চলমান। নতুন লাইন সচল করতে খুব শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। এবার উচ্ছেদের পর পুনরায় অবৈধ স্থাপনা বসানোর সুযোগ থাকবে না।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;