ধানে লোকসান, তামাকে ঝুঁকছেন চাষিরা



নাইমুর রহমান, ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর
ধানের স্থলে তামাক চাষ/ ছবি: বার্তা২৪.কম

ধানের স্থলে তামাক চাষ/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মৌসুম ভেদে নাটোরের লালপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠগুলোতে কখনো দোল খায় পাট, ধানের পাকা শীষ। ধান, পাটসহ রবি ফসল উৎপাদনে লালপুর উপজেলায় রয়েছে অনুকূল পরিবেশ। তবে ন্যায্যমূল্য না থাকায় কয়েক বছর ধারাবাহিক লোকসানের কারণে স্থানীয় কৃষকরা ধান-পাটের বদলে তামাক চাষ শুরু করছেন। তামাক চাষ করে এর বিঘাপ্রতি খরচের প্রায় ১৫ গুণ মুনাফা তুলছেন চাষিরা। এতে অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছেন তামাক চাষে।

উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের আব্দুলপুর, বড়ময়না, কদিমচিলান, দুরদুড়িয়া ইউনিয়নের গন্ডবিল ও দুয়ারিয়া ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই রবি মৌসুমে তামাক চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিসম্পন্ন তামাক চাষ বন্ধে উপজেলা প্রশাসন কিছু পদক্ষেপ নিলেও মাঠ পর্যায়ে তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে তেমন সাড়া মিলছে না। তাছাড়া জনসচেতনতা সৃষ্টি করেও তামাক চাষ বন্ধ করা যাচ্ছে না।

চাষিরা বলছেন, তামাক চাষে তাদের উৎসাহের নেপথ্যে সিগারেট কোম্পানিগুলোর চাষ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বিশেষ প্রণোদনা রয়েছে। যেখানে এক বিঘা জমিতে তামাক চাষে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি চাষিদের বীজ ও সার ক্রয়ের জন্য নগদ ৪ হাজার টাকা ও উৎপাদিত তামাক ন্যায্যমূল্যে চাষিদের বাড়ি থেকে ক্রয় করার নিশ্চয়তা দেয়, সেখানে খাদ্যশস্য উৎপাদনে প্রণোদনা তো দূরের কথা ন্যায্যমূল্যে নিশ্চিতের ব্যবস্থাও নেই। তবে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস ও তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ বিষক্রিয়ার ফলে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবসহ নিজেদের শ্বাসকষ্টজনিত অসুখের কথা স্বীকার করেছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, লালপুরে চলতি মৌসুমে (২০২০ সালে) ৪৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। এর আগে, ২০১৯ সালে ৪৫ হেক্টর, ২০১৮ সালে ৪৫ হেক্টর এবং ২০১৭ সালে ৩৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে।

সম্প্রতি উপজেলার বড়ময়না, আব্দুলপুর, কদিমচিলান, দুয়ারিয়া, দুড়দুরিয়া ও গন্ডবিল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ধান, পেঁয়াজ বা গমের ক্ষেতে পাশাপাশি সারি সারি চাষ হচ্ছে তামাক। আর কয়েক সপ্তাহ পর থেকে তামাক পাতা কাটা ও পোড়ানোর কাজ শুরু হবে। তাই শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তামাক পাতা সংগ্রহের পর পোড়ানোর জন্য চাষিদের বাড়িতে চুল্লী তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। সময়মতো তামাক বুঝে নিতে পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করছেন চুক্তিবদ্ধ তামাক কোম্পানির প্রতিনিধিরা।

নিশ্চিত বিক্রয়, বেশি মুনাফা ও ক্রেতা কোম্পানি প্রদত্ত প্রণোদনাকে অগ্রাধিকার দিয়ে লালপুরের চাষিরা তামাক চাষ করছেন। খাদ্যশস্যের সঙ্গে তুলনামূলক বিচারেও তামাক চাষের মুনাফা অনেকগুণ বেশি। এক বিঘা জমিতে ধানের আবাদে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। জমি থেকে প্রায় ২৫ মন ধান পাওয়া যায় যার প্রতিকেজি ৮০০ টাকা দরে বর্তমান বাজারমূল্য ২০ হাজার টাকা।

অপরদিকে, এক বিঘা জমিতে তামাক উৎপাদনে ব্যয় হয় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। চুক্তিবদ্ধ কোম্পানি চাষিদের এই উৎপাদন ব্যয়ও আগাম প্রদান করে। একই জমিতে তামাক চাষ করলে বিঘাপ্রতি ৪০০ কেজি তামাক পাতা উৎপাদন সম্ভব, যা বর্তমানে প্রতিকেজি ১৫৫ টাকা হিসেবে প্রায় ৬২ হাজার টাকা বাজারমূল্য। এক বিঘা জমিতে ধানের তুলনায় তামাক চাষ করলে ৪০ হাজার টাকা অতিরিক্ত মুনাফা পাওয়া যায়।

আব্দুলপুর গ্রামের তামাক চাষি আব্দুল ওয়াহাব চলতি মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে তামাক চাষ করেছেন। তিনি বলেন, তামাক চাষের সব খরচই কোম্পানি দেয়। আমরা শুধু শ্রম দিই। বাড়ি এসে নগদ টাকা দিয়ে তামাক কিনে নেয় কোম্পানি।

তামাক চাষি বজলু মিয়া বলেন, যখন তামাকের কাঁচা পাতাগুলো গাঁথি তখন গন্ধে খারাপ লাগে। কিন্তু যেহেতু তামাকেই আমাদের জীবিকা, তাই মেনে নিতে হয়।

চার বিঘা জমিতে তামাক চাষ করছেন চাষি নুরুল ইসলাম। তিনি জানান, উপকরণ, শ্রমসহ নানা খরচ করেও ধানের দাম পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় ধান চাষ করা যায় না। কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় ধান চাষের লোকসান কিছুটা হলেও পূরণ সম্ভব তামাক দিয়ে।

জাতীয় কৃষক সমিতি নাটোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম বলেন, কৃষক তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য প্রত্যাশা করবে-এটিই বাস্তবতা। দেশব্যাপী গড়ে উঠা শক্তিশালী সিন্ডিকেট কৃষককে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। রাষ্ট্র যেখানে ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারে না, তখন তামাক চাষ নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা সমীচীন নয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বিনা পুঁজিতে লাভ বেশি পাওয়ায় কৃষকেরা তামাক চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। তামাক চাষে কৃষি ও কৃষকের ক্ষতি জেনেও নিরুৎসাহিত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এ লক্ষ্যে সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;