চানাচুর বিক্রেতা হেলিম যেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা



মাহমুদুল হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার বেশে চানাচুর বিক্রি করছেন হেলিম

হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার বেশে চানাচুর বিক্রি করছেন হেলিম

  • Font increase
  • Font Decrease

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সবার কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় গল্প কাহিনী ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’। গল্পের সেই বংশীবাদকের মতো লাল রংয়ের রহস্যময় পোশাক পরে গাজীপুরে হেলিম নামে একজনকে দেখা গেল। তবে তিনি হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো শিশুদের নিয়ে উধাও হতে নয়; মজাদার চানাচুর বিক্রি করতে এই শহরে এসেছেন।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১১টার দিকে গাজীপুর নগরীর বরুদার ঢাল এলাকায় বিশ্বখ্যাত সেই গল্পের মতই এক ‘বাঁশিওয়ালা’র দেখা মেলে।

যার হাতে টিনের সরু লম্বা বাঁশি, পরনে লাল রঙের পোশাক, কাঁধে ঝুলানো গামছায় বাঁধা টুকরি আর পায়ে ঘুঘুর। সবাইকে আকৃষ্ট করতেই তার এই সাজসজ্জা।

৩০ বছর বয়সী এই যুবকের নাম আব্দুল হেলিম। বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা গ্রামে। সেই ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’র রূপে বিভিন্ন শহর ঘুরে চানাচুর বিক্রি করাই তার পেশা।

শহরে ঘুরে বেরাচ্ছেন হেলিম

তার বাবার নাম আব্দুল কাদির। পরিবারের পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। অভাব অনটনে তৃতীয় শ্রেণির পর আর পড়ার সুযোগ পাননি। সংসারের হাল ধরতে ২০০১ সালে পরিবার ছেড়ে কিশোর বয়সেই চলে আসেন গাজীপুরে। শুরু করেন চিড়ার মোয়া, মুড়ির মোয়া ও চিপস বিক্রি। এতে খুব বেশি আয় হতো না। এরপর চাচাতো ভাই কামাল মিয়ার হাত ধরে ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’ সেজে চানাচুর বিক্রি শুরু করেন। লাভের বড় অংশ কামাল নিয়ে যেতো। এরপর নিজেই ২০০ টাকা পুঁজি খাটিয়ে আলাদা ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে পুঁজির পরিমাণ ৮০০ টাকা। স্বল্প বিনিয়োগের লাভেই ঘুরছে সংসারের চাকা।

দিনে ১২-১৫শ টাকার চানাচুর বিক্রি করতে পারেন। এর অর্ধেক লাভ থাকে। বর্তমানে তার মাসিক খরচ ১২ হাজার টাকার বেশি। চার বছর আগে সাবু আক্তারকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেছেন। বিয়ের আগে বাবা-মাকে মাসিক তিন-সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ দিতেন। স্ত্রী সাবু তিন বছর বয়সী ছেলে জিসান মিয়া ও নয় মাস বয়সী মেয়ে জান্নাতকে নিয়ে গ্রামেই বসবাস করেন। তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে গাজীপুর নগরীর আউটপাড়া নায়েবের বাড়ি এলাকায় ভাড়া থাকেন। আয় কমে খরচ বেড়ে যাওয়ায় এখন আর বাবা-মাকে সাহায্য করতে পারেন না হেলিম।

চানাচুর বিক্রি করছেন হেলিম

তিনি বলেন, ভালো লাগে এই ব্যবসা করতে। লাল পোশাকে মানুষ বেশি আকৃষ্ট হয়। প্যাঁ-পুঁ বাঁশি বাজিয়ে হেঁটে চলি শহরে উপশহরে। প্রথম প্রথম বাচ্চারা দেখলে ভয়ই পেত। এখন তারা আনন্দ পায়। সব জায়গায় ফেরি করতে যাই না। চেনা পরিচিত এলাকায় বেশি যাই। এখন বাচ্চারাও দূর থেকে দেখলেই ছুটে আসে চানাচুর খেতে।

তার মতো একই বেশে গাজীপুরের মাওনা, বরমী, রাজেন্দ্রপুর, বাঘের বাজার, হোতাপাড়া, নাওজোড়, কড্ডা, কোনাবাড়ী, হাড়িনাল, বরুদা, জোড়পুকুর, রাজবাড়ী, শিববাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় ৩০ জন ফেরি করে চানাচুর বিক্রি করেন। যারা একই দলের। তবে তাদের দলের কোনও নাম নেই। হেলিমের সঙ্গে একই কক্ষে তাদের দলের চারজন থাকেন। অন্যরা নিজেদের সুবিধামত শহরের বিভিন্ন জায়গায় বাস করেন।

হেলিমের টুকরির ভেতরে থাকে মুড়ি, চিড়া ভাজা ও চিকন চানাচুর। ক্রেতারা খেতে চাইলে লাল প্লাস্টিকের গ্লাসে এসব ঢুকিয়ে সঙ্গে ধনিয়া পাতা, কাঁচা মরিচ, শসা, গাজর, টমেটো ও পেঁয়াজ দেন। এরপর দারুচিনি, এলাচ, লং, গোলমরিচ, জিরা, পাঁচফোড়ন, জর্তির খাল, জয়ফল, আদা ও রসুন দিয়ে তৈরি এক ধরনের সুস্বাদু মসলা গ্লাসে ভরে সরিষার তেল ও হালকা টেস্টিং সল্ট দিয়ে ঝাঁকিয়ে মেশানোর পর কাগজের ঠোঙ্গাতে তা পরিবেশন করেন।

চানাচুর বিক্রি করছেন হেলিম

বিশেষ মসলা দিয়ে তৈরি এই চানাচুরে অস্বাস্থ্যকর কিছুই নেই দাবি করে হেলিম বলেন, সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খুব যত্ন করে নিজ হাতে এসব প্রস্তুত করি। এরপর বিকেল ৩টার দিকে বের হয়ে রাত ১১-১২টা পর্যন্ত বাইরে থাকি। কখনও কখনও এরও আগে বিক্রি শেষ হয়ে যায়।

তার লক্ষ্যের বিষয়ে প্রশ্ন করতেই আক্ষেপ করে বলেন, অভাব অনটনের সংসারের হাল ধরতে নিজে পড়ালেখা করতে পারিনি। কিন্তু ছেলে-মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাই।

নিজেকে সফল মনে করা এই ব্যক্তি আরও বলেন, সুখি হতে খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই। বেকারত্ব গুছিয়ে স্বাবলম্বী হতেও খুব বেশি পুঁজির দরকার নেই। লক্ষ্য ঠিক রেখে কাজটা চালিয়ে গেলেই থেমে থাকতে হয় না।

চানাচুর ক্রেতা আব্দুস ছামাদ বলেন, হেলিমের বানানো চানাচুর স্বাস্থ্যকর কি-না জানি না। তাকে দেখলেই চানাচুর কিনে খাই। তবে সত্যিই তার চানাচুর অনেক মজাদার। যেই বেশে সে ঘুরে বেড়ায়, তা দেখে সবাই আকৃষ্ট হবে। তার ব্যবসার পলিসিটা দারুণ। প্রতিদিনই সে মোট পুঁজির চেয়ে বেশি লাভ নিয়ে বাসায় ফেরে।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;