বোরো ধানের ‘গোলা’ চলনবিলে ক্রয় বাড়ানোর দাবি



নাইমুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নাটোর
বোরো ধান

বোরো ধান

  • Font increase
  • Font Decrease

চলনবিলকে বলা হয় বোরো ধানের গোলা। বছরের অধিকাংশ সময় পানিতে নিমজ্জিত চলনবিলে আবাদি জমিগুলো এক ফসলি। সেচনির্ভর বোরো ধানের আবাদই এখানে মৌসুমের প্রধান ও একমাত্র ফসল। বোরো ধান চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাকে খাদ্যশস্যে সমৃদ্ধ করেছে। শস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত নাটোরের সিংড়া উপজেলায় এই বোরো ধানের আবাদ ছাড়িয়ে গেছে পার্শ্ববর্তী এলাকাকে। গত পাঁচ বছরে নাটোর জেলায় উৎপাদিত মোট বোরো ধানের ৬৩ শতাংশ আবাদ হয়েছে সিংড়ার বিলগুলোতে। তাই বোরো আবাদ নিয়ে এবার আগাম ভাবনায় কৃষক।

সিংড়া ছাড়াও নলডাঙ্গার হালতিবিল, চলনবিল অধ্যুষিত বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর, লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলাতেও উৎপাদিত হয় বোরো ধান। এর মধ্যে সিংড়ার পর অবস্থান যথাক্রমে নলডাঙ্গার হালতিবিল, গুরুদাসপুর ও বড়াইগ্রাম।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এ কে এম হেলাল উদ্দীন জানান, চলতি ২০১৯-২০ মৌসুমে জেলায় ৫৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত ৫২ হাজার ৪১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ সম্পন্ন হয়েছে।

জানা যায়, গত ৫ বছরে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৫৭ হাজার ৩৩৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্য স্থির করা হলেও ৫৮ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ২২ হাজার ৮৮৯ মেট্রিক টন হলেও প্রকৃত উৎপাদনের পরিমাণ ছিলো ২ লাখ ৬৪ হাজার ৩৪৬ মেট্রিক টন। একইভাবে ২০১৫-১৬ মৌসুমে ৫৬ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৩৫ মেট্রিক টন, ২০১৬-১৭ মৌসুমে ৫৬ হাজার ২৮৩ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৫৮ হাজার ০৪৪ মেট্রিক টন, ২০১৭-১৮ মৌসুমে ৬১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৮৮ হাজার ০০৬ মেট্রিক টন, ২০১৮-১৯ মৌসুমে ৬১ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩১৩ মেট্রিক টন বোরো ধানের আবাদ হয়।

২০১৪-১৫ আবাদ মৌসুম থেকে ২০১৮-১৯ আবাদ মৌসুম পর্যন্ত জেলায় ১৩ লাখ ৪২ হাজার মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে শুধু সিংড়াতেই উৎপাদিত হয়েছে ৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৪৮ মেট্রিক টন। এছাড়া, নলডাঙ্গায় ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৪ মেট্রিক টন, গুরুদাসপুরে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৩৮ মেট্রিক টন, বড়াইগ্রামে ১ লাখ ১ হাজার ২১৭ মেট্রিক টন, লালপুরে ২০ হাজার ৮৫১ মেট্রিক টন এবং বাগাতিপাড়ায় ১৭ হাজার ৪২৬ মেট্রিক টন।

এদিকে, জেলায় বোরো ধানের উৎপাদন আশাব্যঞ্জক হলেও উদ্বৃত্ত ধান নিয়ে বরাবরই বিপাকে পড়েন কৃষকরা। প্রতি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় গড়ে ২৭ হাজার ১৪২ মেট্রিক টন করে বোরো ধান উৎপাদিত হলেও সমগ্র জেলায় সরকারিভাবে সংগৃহীত ধানের পরিমাণ মাত্র ২ হাজার মেট্রিক টন। আবার সরকারের খাদ্য বিভাগের নিকট ধান বিক্রিতেও শক্তিশালী সিন্ডিকেট কবলে পড়তে হয় চাষিদের। সে হিসেবে উৎপাদিত বোরোর সিংহভাগই উদ্বৃত্ত হিসেবে থেকে যায়। স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরকারি ক্রয়ের পরিমাণ বাড়ালে উদ্বৃত্ত ধানের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তির মাধ্যমে কৃষকের বিক্রি নিশ্চিত হবে।

সিংড়ার চৌগ্রামের কৃষক সালাউদ্দীন আহমেদ বলেন, বছরে বোরো আবাদকালীন সময়ে চলনবিল এলাকায় অকাল বন্যা হয়। এত ক্ষেতের ফসল ক্ষেতেই তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। প্রাকৃতিক দুর্বিপাক না থাকলে এ অঞ্চলে বোরো ধানের আবাদ আরও বাড়তো।

ইটালি ইউনিয়নের বিল তাজপুর গ্রামের কৃষক রিপন আলী বলেন, নানা প্রতিকূলতা সত্বেও সিংড়ায় বোরোর আবাদই জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। চাষিরা বোরো আবাদে যেসব ঝুঁকি নেয়, সে অনুযায়ী ধানের দাম পায় না। সরকার ধানের ক্রয় বাড়ালে কৃষক কিছুটা হলেও লাভবান হবে।

নলডাঙ্গার হালতি বিলের খোলাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক মাসুদুর রহমান বলেন, এখানে বোরো আবাদ বেশি হওয়ায় অন্যান্য জেলাগুলো থেকে সংগ্রহ কমিয়ে এখান থেকে সরকার ক্রয় করতে পারে। আসন্ন মৌসুমগুলোতে সরকার এমন পদক্ষেপ নিলে কৃষক লাভবান হবে।

জাতীয় কৃষক সমিতির জেলা সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, সিংড়ার মতো এক ফসলি এলাকায় বোরো ধানের আবাদ বেশি হলেও সরকার বোরো রেখে বেশি পরিমাণে আমন ধান সংগ্রহ করে। এটি সরাসরি কৃষকদের সঙ্গে তামাশা। বোরো ধানে চলনবিল স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও দাম না পেয়ে বারবারই কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক ফসলি আবাদ এলাকাগুলোতে সরকারের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার বলেন, নাটোর থেকে বোরো ধান সংগ্রহ বাড়াতে প্রতিবারই আমরা খাদ্য বিভাগের কাছে প্রস্তাব রাখি। জেলা ভিত্তিক উৎপাদন অনুপাতের নিরিখে চূড়ান্ত চাহিদা দেয় খাদ্য বিভাগ। আশার কথা হলো, চলতি মৌসুমে যেভাবে জেলা থেকে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ায় অতিরিক্ত ৭০০ মেট্রিক টন ক্রয়ের চাহিদা এসেছে সেভাবে আগামীতে বোরোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সাপেক্ষে উদ্বৃত্ত ধান সরবরাহের সুপারিশ করা হবে।

   

গড়াই নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার খোকসায় গড়াই নদীতে ডুবে সুমন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে খোকসা উপজেলার গনেশপুর অংশে গড়াই নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মৃত সুমন কুমারখালী উপজেলার রাজাপুর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

খোকসা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ারম্যান হাবিবুর রহমান জানান, সকালের দিকে গড়াই নদীতে মাছ ধরতে যান সুমন। মাছ ধরার এক পর্যায়ে নদীতে ডুবে যান তিনি। বিকেলের দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

;

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে সাফায়েত হোসেন (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় সালাউদ্দিন (২২) নামের আরেক যুবক গুরুতর আহত হন।

রোববার (৫ এপ্রিল) এই বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। তাদের উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওই কিশোরকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ি দক্ষিণপাড়া স্কুল বাড়ির আবদুল আউয়ালের ছেলে সাফায়াত হোসেন এদিন বিকেলে সহপাঠীদের সাথে পার্শ্ববর্তী ঘোড়াময়দান গ্রামের একটি মাঠে ফুটবল খেলতে যায়। বিকাল ৫টার দিকে খেলা চলা অবস্থায় আকস্মিক বজ্রপাতে সাফায়েতের পুরো শরীর ঝলসে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে লাকসামের একটি ক্লিনিকে নেয়া হলে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া বজ্রপাতে ওই ঘোড়াময়দান গ্রামের নুরুল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (২২) গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব ঘটনার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

;

লক্ষ্মী ভাইয়েরা বাসায় যান, নিজেসহ দেশকে বাঁচান



নাহিদ রেজা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
ওসি তানভিরুল ইসলাম।

ওসি তানভিরুল ইসলাম।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমার লক্ষ্মী ভাইয়েরা দয়া করে বাইরে ঘোরাঘুরি না করে বাসায় যান। নিজে বাঁচেন, পরিবারকে বাঁচান, দেশকে বাঁচান। সচেতন হোন।

ঠিক এসব কথা বলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এভাবে সচেতন করায় সাধুবাদ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওষুধ কেনার জন্য স্থানীয় বাজারে এসেছিলাম। কিছুক্ষণ পর থানার একটি গাড়ি বাজারের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং ওসি তানভিরুল সবাইকে বাসায় থাকার জন্য অনুরোধ করেন। এর আগে কখনো জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন ভালো আচরণ দেখি নাই।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চৌড়াস্তা মোড়ে কথা হয় জয়নাল নামে এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলার পুলিশ সাধারণ জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছে। তাদের ভাই বলে বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। ওসিসহ পুলিশের সদস্যরা নিজেদের কথা চিন্তা না করে আমাদের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন। তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

স্থানীয় সাহাদত হোসেন নামে একজন বলেন,‘তানভিরুল ভাই একজন মানবিক পুলিশ অফিসার। তার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।’

ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরকার যেসব দিক নির্দেশনা দিয়েছে সেগুলো মেনে চলতে হবে। জনগণের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে তাদের সচেতন করা হচ্ছে। এতে কাজও হচ্ছে।’

;

ডিবি পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই, যুবক গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
গ্রেফতার আবেদ আলী।

গ্রেফতার আবেদ আলী।

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার অপরাধে আবেদ আলী (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৫ এপ্রিল) বিকেলে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আবেদ আলী সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া গ্রামের খয়রাত হোসেনের ছেলে।

জানা গেছে, শনিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের আঙ্গারপাড়া গ্রামে মোকছেদুল ইসলামসহ কয়েক যুবক মোবাইলে ভিডিও গেম খেলছিলেন। এ সময় আবেদ আলী নিজেকে সৈয়দপুর থানার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে ওই যুবকদের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে মোবাইলের মালিক মোকছেদুল ইসলাম সদর থানায় অভিযোগ করেন।

এরপর রোববার ভোরে আবেদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল ও ওয়্যারলেস সেট, একাধিক মোবাইল সিম এবং দুটি পরিচয়পত্র জব্দ করে পুলিশ।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি পুলিশের ভুয়া পরিচয়ে মোবাইল ছিনতাই করার সত্যতা স্বীকার করেছেন আবেদ আলী। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;